বিসর্জন

দিয়ে যায় শোণিতের ছাপ! এ শোণিতে

তবু করিব না রোধ?

 

মুখ ঢাকিয়া

 

গুণবতী।                       যাও, যাও তুমি!

গোবিন্দমাণিক্য।   হায় মহারানী, কর্তব্য কঠিন হয়

তোমরা ফিরালে মুখ।

[ প্রস্থান

কাঁদিয়া উঠিয়া

 

গুণবতী।                         ওরে অভাগিনী,

এতদিন এ কী ভ্রান্তি পুষেছিলি মনে!

ছিল না সংশয়মাত্র, ব্যর্থ হবে আজ

এত অনুরোধ, এত অনুনয়, এত

অভিমান। ধিক্‌, কী সোহাগে পুত্রহীনা

পতিরে জানায় অভিমান! ছাই হোক

অভিমান তোর! ছাই এ কপাল! চাই

মহিষীগরব! আর নহে প্রেমখেলা,

সোহাগক্রন্দন। বুঝিয়াছি আপনার

স্থান — হয় ধূলিতলে নতশির, নয়

ঊর্ধ্বফণা ভুজঙ্গিনী আপনার তেজে।


পঞ্চম দৃশ্য
মন্দির
একদল লোকের প্রবেশ

নেপাল। কোথায় হে, তোমাদের তিনশো পাঁঠা, একশো-এক মোষ! একটা টিকটিকির ছেঁড়া নেজটুকু পর্যন্ত দেখবার জো নেই। বাজনাবাদ্যি গেল কোথায়, সব যে হাঁ-হাঁ করছে। খরচপত্র করে পুজো দেখতে এলুম, আচ্ছা শাস্তি হয়েছে!

গণেশ। দেখ্‌, মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে অমন করে বলিস নে। মা পাঁঠা পায় নি, এবার জেগে উঠে দের এক-একটাকে ধরে ধরে মুখে পুরবে।

হারু। কেন! গেল বছরে বাছারা সব ছিলে কোথায়? আর, সেই ও বছর, যখন ব্রত সাঙ্গ করে রানীমা পুজো দিয়েছিল, তখন কি তোদের পায়ে কাঁটা ফুটেছিল? তখন একবার দেখে যেতে পারো নি? রক্তে যে গোমতী রাঙা হয়ে গিয়েছিল। আর অলুক্ষুনে বেটারা এসেছিস, আর মায়ের খোরাক পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেল। তোদের এক-একটাকে ধরে মা'র কাছে নিবেদন করে