বিসর্জন
দিলে মনের খেদ মেটে।

কানু। আর ভাই, মিছে রাগ করিস। আমাদের কি আর বলবার মুখ আছে! তা হলে কি আর দাঁড়িয়ে ওর কথা শুনি!

হারু। তা যা বলিস ভাই, অপ্পেতেই আমার রাগ হয় সে কথা সত্যি। সেদিন ও ব্যক্তি শালা পর্যন্ত উঠেছিল, তার বেশি যদি একটা কথা বলত, কিম্বা আমার গায়ে হাত দিত, মাইরি বলছি, তা হলে আমি —

নেপাল। তা, চল্‌-না দেখি, কার হাড়ে কত শক্তি আছে।

হারু। তা, আয়-না, জানিস? এখানকার দফাদার আমার মামাতো ভাই হয়!

নেপাল। তা, নিয়ে আয় তোর মামাকে সুদ্ধ নিয়ে আয়, তোর দফাদারের দফা নিকেশ করে দিই।

হারু। তোমরা সকলেই শুনলে!

গণেশ ও কানু। আর দূর কর্ ভাই, ঘরে চল্‌। আজ আর কিছুতে গা লাগছে না। এখন তোদের তামাশা তুলে রাখ্‌।

হারু। এ কি তামাশা হল? আমার মামাকে নিয়ে তামাশা! আমাদের দফাদারের আপনার বাবাকে নিয়ে —

গণেশ ও কানু। আর রেখে দে! তোর আপনার বাবা নিয়ে তুই আপনি মর্।

[ সকলের প্রস্থান

রঘুপতি নয়নরায় ও জয়সিংহের প্রবেশ

রঘুপতি।     মা ' র 'পরে ভক্তি নাই তব?

নয়নরায়।                                 হেন কথা

কার সাধ্য বলে! ভক্তবংশে জন্ম মোর।

রঘুপতি।     সাধু, সাধু! তবে তুমি মায়ের সেবক,

আমাদেরই লোক।

নয়নরায়।                     প্রভু, মাতৃভক্ত যাঁরা

আমি তাঁহাদেরই দাস।

রঘুপতি।                     সাধু! ভক্তি তব

হউক অক্ষয়। ভক্তি তব বাহুমাঝে

করুক সঞ্চার অতি দুর্জয় শকতি।

ভক্তি তব তরবারি করুক শাণিত,

বজ্রসম দিক তাহে তেজ। ভক্তি তব

হৃদয়েতে করুক বসতি, পদমান

সকলের উচ্চে।

নয়নরায়।                    ব্রাহ্মণের আশীর্বাদ

ব্যর্থ হইবে না।

রঘুপতি।                           শুন তবে সেনাপতি,

তোমার সকল বল করো একত্রিত

মা ' র কাজে। নাশ করো মাতৃবিদ্রোহীরে।