বিসর্জন

চাহি না পড়িতে। আমি জানি এক পথ

আছে — সেই পথ বিশ্বাসের পথ। সেই

সিধে পথ বেয়ে চিরদিন চলে যাবে

অবোধ অধম ভৃত্য এ নয়নরায়।

[ প্রস্থান

জয়সিংহ।     চিন্তা কেন দেব? এমনি বিশ্বাসবলে

মোরাও করিব কাজ। কারে ভয় প্রভু!

সৈন্যবলে কোন্‌ কাজ! অস্ত্র কোন্‌ ছার!

যার 'পরে রয়েছে যে ভার, বল তার

আছে সে কাজের। করিবই মা ' র পূজা

যদি সত্য মায়ের সেবক হই মোরা।

চলো প্রভু, বাজাই মায়ের ডঙ্কা, ডেকে

আনি পুরবাসীগণে, মন্দিরের দ্বার

খুলে দিই! — ওরে, আয় তোরা, আয়, আয়,

অভয়ার পূজা হবে — নির্ভয়ে আয় রে

তোরা মায়ের সন্তান! আয় পুরবাসী!

[ জয়সিংহ ও রঘুপতির প্রস্থান

পুরবাসীগণের প্রবেশ

 

অক্রূর।ওরে, আয় রে আয়!

সকলে। জয় মা!

হারু।আয় রে, মায়ের সামনে বাহু তুলে নৃত্য করি।

গান

উলঙ্গিনী   নাচে রণরঙ্গে।

আমরা   নৃত্য করি সঙ্গে।

দশ দিক   আঁধার করে মাতিল দিক্‌বসনা,

জ্বলে   বহ্নিশিখা রাঙা-রসনা,

দেখে   মরিবারে ধাইছে পতঙ্গে।

কালো কেশ   উড়িল আকাশে,

রবি সোম   লুকালো তরাসে।

রাঙা   রক্তধারা ঝরে কালো অঙ্গে,

ত্রিভুবন   কাঁপে ভুরুভঙ্গে।