বিসর্জন

গুণবতী।                কেন, কী হয়েছে?

নক্ষত্ররায়।                            আমি

রাজা নাহি হব।

গুণবতী।                   নাই হলে। তাই বলে

এত আস্ফালন কেন?

নক্ষত্ররায়।                            চিরকাল বেঁচে

থাক্‌ রাজা, আমি যেন যুবরাজ থেকে

মরি।

গুণবতী।     তাই মরো। শীঘ্র মরো। পূর্ণ হোক

মনোরথ। আমি কি তোমার পায়ে ধরে

রেখেছি বাঁচিয়ে?

নক্ষত্ররায়।             তবে কী বলিবে বলো।

গুণবতী।     যে চোর করিছে চুরি তোমারি মুকুট

তাহারে সরায়ে দাও। বুঝেছ কি?

নক্ষত্ররায়।                                 সব

বুঝিয়াছি, শুধু কে সে চোর বুঝি নাই।

গুণবতী।     ওই-যে বালক ধ্রুব। বাড়িছে রাজার

কোলে, দিনে দিনে উঁচু হয়ে উঠিতেছে

মুকুটের পানে।

নক্ষত্ররায়।                        তাই বটে? এতক্ষণে

বুঝিলাম সব। মুকুট দেখেছি বটে

ধ্রুবের মাথায়। আমি বলি শুধু খেলা।

গুণবতী।     মুকুট লইয়া খেলা? বড়ো কাল-খেলা —

এই বেলা ভেঙে দাও খেলা — নহে তুমি

সে খেলার হইবে খেলেনা।

নক্ষত্ররায়।                             তাই বটে!

এ তো ভালো খেলা নয়।

গুণবতী।                             অর্ধরাত্রে আজি

গোপনে লইয়া তারে দেবীর চরণে

মোর নামে কোরো নিবেদন। তার রক্তে

নিবে যাবে দেবরোষানল, স্থায়ী হবে

সিংহাসন এই রাজবংশে — পিতৃলোক