যোগাযোগ

কালু। একটা কথা না বলে থাকতে পারছি নে — জাল বড়ো জটিল হয়ে এসেছে, তুমি যদি এই সময়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরে না যাও, বিপদ আরো ঘনিয়ে ধরবে। আমি তো কোনো উপায় ভেবে পাচ্ছি নে।

তোমার স্বামীর ওখান থেকে তাগিদ এসেছে, সেটা অগ্রাহ্য করবার শক্তি কি আমাদের আছে? আমরা যে একেবারে তার মুঠোর মধ্যে।

কুমুদিনী। আমি কিছুই বুঝতে পারছি নে, কালুদা। প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে। মনে হয় মরণ ছাড়া কোনো রাস্তাই আমার খোলা নেই।

কালু। না দিদি, শান্ত হও, কিছু ভেবো না, একটা কিছু উপায় হবেই। চললুম আমি।

[ প্রস্থান

মোতির মার প্রবেশ

 

মোতির মা। দিদি, একটা কথা তোমাকে বলে যাই। পোয়াতি হয়েছ সে খবর কি এখনো তুমি নিজে জানতে পার নি? এইমাত্র তোমার পিসিমাকে বলে এসেছি জানাতে তোমার দাদাকে।

 

হাত মুঠো করে

কুমুদিনী। না, না, এ কখনোই হতে পারে না, কিছুতেই না।

 

বিরক্ত হয়ে

মোতির মা। কেন হতে পারবে না ভাই? তুমি যত বড়ো ঘরেরই মেয়ে হও-না-কেন, তোমার বেলাতেই তো সংসারের নিয়ম উল্‌টে যাবে না। তুমি ঘোষালদের ঘরের বউ তো, ঘোষাল বংশের ইষ্টিদেবতা কি তোমাকে সহজে ছুটি দেবেন? পালাবার পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।

 

উদ্‌বিগ্নমুখে

 

কুমুদিনী। কী করে তুমি নিশ্চয় জানলে?

মোতির মা। ছেলের মা আমি, আমি জানব না? কিছুদিন থেকেই আমার সন্দেহ হয়েছিল, আর সন্দেহ নেই।

কুমুদিনী। খবরটা কি সবাই জানে?

মোতির মা। এই খানিক আগেই তোমার দেওরকে বলেছি। সে লাফিয়ে গেল বড়োঠাকুরকে খবর দিতে।

কুমুদিনী। দাদা জেনেছেন?

মোতির মা। ক্ষ্যামাপিসি তাঁকে নিশ্চয় খবর দিয়েছেন। এখন যাই বোন, তোমাকে ঘরে ফিরিয়ে নেবার আয়োজন করতে হবে।

[প্রস্থান

পরের দৃশ্য

বিপ্রদাস

 

কুমুদিনীর প্রবেশ