বর্ষশেষ

১৩০৫ সালে ৩০শে চৈত্র ঝড়ের দিনে রচিত

ঈশানের পুঞ্জমেঘ অন্ধবেগে ধেয়ে চলে আসে

          বাধাবন্ধহারা

গ্রামান্তের বেণুকুঞ্জে নীলাঞ্জনছায়া সঞ্চারিয়া

          হানি দীর্ঘধারা।

বর্ষ হয়ে আসে শেষ, দিন হয়ে এল সমাপন,

          চৈত্র অবসান—

গাহিতে চাহিছে হিয়া পুরাতন ক্লান্ত বরষের

          সর্বশেষ গান।

 

 

ধূসরপাংশুল মাঠ, ধেনুগণ ধায় ঊর্ধ্বমুখে,

          ছুটে চলে চাষি।

তুরিতে নামায় পাল নদীপথে ত্রস্ত তরী যত

          তীরপ্রান্তে আসি।

পশ্চিমে বিচ্ছিন্ন মেঘে সায়াহ্নের পিঙ্গল আভাস

          রাঙাইছে আঁখি—

বিদ্যুৎ-বিদীর্ণ শূন্যে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে চলে যায়

          উৎকণ্ঠিত পাখি।

 

 

বীণাতন্ত্রে হানো হানো খরতর ঝংকারঝঞ্ঝনা,

          তোলো উচ্চসুর।

হৃদয় নির্দয়ঘাতে ঝর্ঝরিয়া ঝরিয়া পড়ুক

          প্রবল প্রচুর।

ধাও গান, প্রাণভরা ঝড়ের মতন ঊর্ধ্ববেগে

          অনন্ত আকাশে।

উড়ে যাক, দূরে যাক বিবর্ণ বিশীর্ণ জীর্ণ পাতা

          বিপুল নিশ্বাসে।