সময়হারা

                          খবর এল, সময় আমার গেছে,

                     আমার-গড়া পুতুল যারা বেচে

               বর্তমানে এমনতরো পসারী নেই ;

         সাবেক কালের দালানঘরের পিছন কোণেই

                                  ক্রমে ক্রমে

                           উঠছে জমে জমে

                     আমার হাতের খেলনাগুলো,

                                        টানছে ধুলো।

                                  হাল আমলের ছাড়পত্রহীন

         অকিঞ্চনটা লুকিয়ে কাটায় জোড়াতাড়ার দিন।

               ভাঙা দেয়াল ঢেকে একটা ছেঁড়া পর্দা টাঙাই ;

         ইচ্ছে করে, পৌষমাসের হাওয়ার তোড়টা ভাঙাই ;

               ঘুমোই যখন ফড়্‌ফড়িয়ে বেড়ায় সেটা উড়ে,

                                নিতান্ত ভুতুড়ে।

               আধপেটা খাই শালুক-পোড়া ; একলা কঠিন ভুঁয়ে

                     চেটাই পেতে শুয়ে

                           ঘুম হারিয়ে ক্ষণে ক্ষণে

                     আউড়ে চলি শুধু আপন-মনে —

               “ উড়কি ধানের মুড়কি দেব, বিন্নে ধানের খই,

                     সরু ধানের চিঁড়ে দেব, কাগমারে দই। ”

         আমার চেয়ে কম-ঘুমন্ত নিশাচরের দল

               খোঁজ নিয়ে যায় ঘরে এসে, হায় সে কী নিষ্ফল।

         কখনো বা হিসেব ভুলে আগে মাতাল চোর,

               শূন্য ঘরের পানে চেয়ে বলে, “ সাঙাত মোর,

                     আছে ঘরে ভদ্র ভাষায় বলে যাকে দাওয়াই?”

         নেই কিছু তো, দু-এক ছিলিম তামাক সেজে খাওয়াই।

                      একটু যখন আসে ঘুমের ঘোর

         সুড়সুড়ি দেয় আরসুলারা পায়ের তলায় মোর।

                     দুপুরবেলায় বেকার থাকি অন্যমনা ;

         গিরগিটি আর কাঠবিড়ালির আনাগোনা