আকাশপ্রদীপ

                     সেই দালানের বাহির ঝোপে ;

                          থামের মাথায় খোপে খোপে

               পায়রাগুলোর সারাটা দিন বকম্‌-বকম্‌।

         আঙিনাটার ভাঙা পাঁচিল, ফাটলে তার রকম-রকম

                                লতাগুল্ম পড়ছে ঝুলে,

                          হলদে সাদা বেগনি ফুলে

                                আকাশ-পানে দিচ্ছে উঁকি।

                          ছাতিমগাছের মরা শাখা পড়ছে ঝুঁকি

                                শঙ্খমণির খালে,

               মাছরাঙারা দুপুরবেলায় তন্দ্রানিঝুম কালে

         তাকিয়ে থাকে গভীর জলের রহস্যভেদরত

                                বিজ্ঞানীদের মতো।

                     পানাপুকুর, ভাঙনধরা ঘাট,

               অফলা এক চালতাগাছের চলে ছায়ার নাট।

               চক্ষু বুজে ছবি দেখি — কাৎলা ভেসেছে,

         বড়ো সাহেবের বিবিগুলি নাইতে এসেছে।

                     ঝাউগুঁড়িটার'পরে

               কাঠঠোকরা ঠক্‌ঠকিয়ে কেবল প্রশ্ন করে।

         আগে কানে পৌঁছত না ঝিঁঝিঁপোকার ডাক,

               এখন যখন পোড়ো বাড়ি দাঁড়িয়ে হতবাক্‌

                     ঝিল্লিরবের তানপুরা-তান স্তব্ধতা-সংগীতে

                          লেগেই আছে একঘেয়ে সুর দিতে।

         আঁধার হতে না হতে সব শেয়াল ওঠে ডেকে

               কল্‌মদিঘির ডাঙা পাড়ির থেকে।

         পেঁচার ডাকে বাঁশের বাগান হঠাৎ ভয়ে জাগে,

                     তন্দ্রা ভেঙে বুকে চমক লাগে।

         বাদুড়-ঝোলা তেঁতুলগাছে মনে যে হয় সত্যি,

                     দাড়িওয়ালা আছে ব্রহ্মদত্যি।

          রাতের বেলায় ডোমপাড়াতে কিসের কাজে

                     তাক্‌ধুমাধুম বাদ্যি বাজে।

         তখন ভাবি, একলা ব ' সে দাওয়ার কোণে

                     মনে-মনে,