আকাশপ্রদীপ

         ঝড়েতে কাত জারুলগাছের ডালে ডালে

                     পির্‌ভু নাচে হাওয়ার তালে।

         শহর জুড়ে নামটা ছিল, যেদিন গেল ভাসি

                          হলুম বনগাঁবাসী।

         সময় আমার গেছে ব ' লেই সময় থাকে পড়ে,

               পুতুল গড়ার শূন্য বেলা কাটাই খেয়াল গ ' ড়ে।

         সজনেগাছে হঠাৎ দেখি কমলাপুলির টিয়ে —

               গোধূলিতে সুয্যিমামার বিয়ে ;

          মামি থাকেন, সোনার বরন ঘোমটাতে মুখ ঢাকা,

               আলতা পায়ে আঁকা।

         এইখানেতে ঘুঘুডাঙার খাঁটি খবর মেলে

               কুলতলাতে গেলে।

             সময় আমার গেছে ব ' লেই জানার সুযোগ হল

         ‘ কলুদ ফুল ' যে কাকে বলে, ওই যে থোলো থোলো

                      আগাছা জঙ্গলে

            সবুজ অন্ধকারে যেন রোদের টুক্‌রো জ্বলে।

               বেড়া আমার সব গিয়েছে টুটে ;

         পরের গোরু যেখান থেকে যখন খুশি ছুটে

                     হাতার মধ্যে আসে ;

         আর কিছু তো পায় না, খিদে মেটায় শুকনো ঘাসে।

                আগে ছিল সাট্‌ন্‌ বীজে বিলিতি মৌসুমি,

                     এখন মরুভূমি।

         সাত পাড়াতে সাত কুলেতে নেইকো কোথাও কেউ

               মনিব যেটার, সেই কুকুরটা কেবল ই ঘেউ-ঘেউ

         লাগায় আমার দ্বারে ; আমি বোঝাই তারে কত,

               আমার ঘরে তাড়িয়ে দেবার মতো

                     ঘুম ছাড়া আর মিলবে না তো কিছু —

         শুনে সে লেজ নাড়ে, সঙ্গে বেড়ায় পিছু পিছু।

                     অনাদরের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে পিঠের ‘ পরে

               জানিয়ে দিলে, লক্ষ্মীছাড়ার জীর্ণ ভিটের ‘ পরে

         অধিকারের দলিল তাহার দেহেই বর্তমান।

               দুর্ভাগ্যের নতুন হাওয়া-বদল করার স্থান