পুনশ্চ

অপরাধের শৃঙ্খলে আপন বলির কাছে তারা বাঁধা।

পরস্পরকে তারা শুধায়, কে আমাদের পথ দেখাবে।

পূর্বদেশের বৃদ্ধ বললে,

আমরা যাকে মেরেছি সেই দেখাবে।

সবাই নিরুত্তর ও নতশির।

বৃদ্ধ আবার বললে, সংশয়ে তাকে আমরা অস্বীকার করেছি,

ক্রোধে তাকে আমরা হনন করেছি,

প্রেমে এখন আমরা তাকে গ্রহণ করব,

কেননা, মৃত্যুর দ্বারা সে আমাদের সকলের জীবনের মধ্যে সঞ্জীবিত

সেই মহামৃত্যুঞ্জয়।

সকলে দাঁড়িয়ে উঠল, কণ্ঠ মিলিয়ে গান করলে

‘জয় মৃত্যুঞ্জয়ের জয়'।

তরুণের দল ডাক দিল, চলো যাত্রা করি প্রেমের তীর্থে, শক্তির তীর্থে।

হাজার কণ্ঠের ধ্বনিনির্ঝরে ঘোষিত হল —

আমরা ইহলোক জয় করব এবং লোকান্তর।

উদ্দেশ্য সকলের কাছে স্পষ্ট নয়, কেবল আগ্রহে সকলে এক;

মৃত্যুবিপদকে তুচ্ছ করেছে সকলের সম্মিলিত সঞ্চলমান ইচ্ছার বেগ।

তারা আর পথ শুধায় না, তাদের মনে নেই সংশয়,

চরণে নেই ক্লান্তি।

মৃত অধিনেতার আত্মা তাদের অন্তরে বাহিরে —

সে যে মৃত্যুকে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং জীবনের সীমাকে করেছে অতিক্রম।

তারা সেই ক্ষেত্র দিয়ে চলেছে যেখানে বীজ বোনা হল,

সেই ভাণ্ডারের পাশ দিয়ে যেখানে শস্য হয়েছে সঞ্চিত,

সেই অনুর্বর ভূমির উপর দিয়ে

যেখানে কঙ্কালসার দেহ বসে আছে প্রাণের কাঙাল;

তারা চলেছে প্রজাবহুল নগরের পথ দিয়ে,

চলেছে জনশূন্যতার মধ্যে দিয়ে

যেখানে বোবা অতীত তার ভাঙা কীর্তি কোলে নিয়ে নিস্তব্ধ;

চলেছে লক্ষ্মীছাড়াদের জীর্ণ বসতি বেয়ে