সে
বাঘেরা যুক্তিবাদী এবং সর্বজীবে এদের সম্মানবোধ অত্যন্ত ফলাও। এমন - কি, এরা পশ্চিম - পারের চাষী কৈবর্তদেরও খেতে চায়, এতই এদের উদার মন। ঘোরতর দলাদলি বেধে গেছে। প্রাচীনরা নব্য সম্প্রদায়কে নাম দিয়েছে চাষী - কৈবর্ত - খেগো, এই নিয়ে মহা হাসাহাসি পড়েছে।

পুপু বললে, আচ্ছা দাদামশায়, তুমি কখনো বাঘের উপর কবিতা লিখেছ?

হার মানতে মন গেল না। বললুম, হাঁ লিখেছি।

শোনাও - না।

গম্ভীর সুরে আবৃত্তি করে গেলুম —

 

তোমার সৃষ্টিতে কভু শক্তিরে কর না অপমান,

হে বিধাতা — হিংসারেও করেছ প্রবল হস্তে দান

আশ্চর্য মহিমা এ কী। প্রখরনখর বিভীষিকা,

সৌন্দর্য দিয়েছ তারে, দেহধারী যেন বজ্রশিখা,

যেন ধূর্জটির ক্রোধ। তোমার সৃষ্টির ভাঙে বাঁধ

ঝঞ্ঝা উচ্ছৃঙ্খল, করে তোমার দয়ার প্রতিবাদ

বনের যে দস্যু সিংহ, ফেনজিহ্ব ক্ষুব্ধ সমুদ্রের

যে উদ্ধত ঊর্ধ্ব ফণা, ভূমিগর্ভে দানবযুদ্ধের

ডমরুনিঃস্বনী স্পর্ধা, গিরিবক্ষভেদী বহ্নিশিখা

যে আঁকে দিগন্তপটে আপন জ্বলন্ত জয়টিকা,

প্রলয়নর্তিনী বন্যা বিনাশের মদিরবিহ্বল

নির্লজ্জ নিষ্ঠুর — এই যত বিশ্ববিপ্লবীর দল

প্রচণ্ড সুন্দর। জীবলোকে যে দুর্দান্ত আনে ত্রাস

হীনতালাঞ্ছনে সে তো পায় না তোমার পরিহাস।

 

চুপ করে রইল পুপু। আমি বললুম, কী দিদি, ভালো লাগল না বুঝি।

ও কুণ্ঠিত হয়ে বললে, না না, ভালো লাগবে না কেন। কিন্তু, এর মধ্যে বাঘটা কোথায়।

আমি বললুম, যেমন সে থাকে ঝোপের মধ্যে, দেখা যায় না তবু আছে ভয়ংকর গোপনে।

পুপু বললে, অনেকদিন আগে গ্লিসেরিন - সোপ - খোঁজা বাঘের কথা আমাকে বলেছিলেন। তার খবরটা কোথা থেকে পেলে সে।

আমার কথা ও করে চুরি, নিজের মুখে সেটা দেয় বসিয়ে।

কিন্তু —

‘ কিন্তু' না তো কী। লিখেছে ভালোই।

কিন্তু —