বিসর্জন

বাহিরে তোমার রাজ্য। যেথা তব আজ্ঞা

নাহি চলে, সেথা আজ্ঞা নাহি দিয়ো।

গোবিন্দমাণিক্য।                           মা ' র

আজ্ঞা, মোর আজ্ঞা নহে।

গুণবতী।                   কেমনে জানিলে?

গোবিন্দমাণিক্য।   ক্ষীণ দীপালোকে গৃহকোণে থেকে যায়

অন্ধকার ; সব পারে, আপনার ছায়া

কিছুতে ঘুচাতে নারে দীপ। মানবের

বুদ্ধি দীপসম, যত আলো করে দান

তত রেখে দেয় সংশয়ের ছায়া। স্বর্গ

হতে নামে যবে জ্ঞান, নিমেষে সংশয়

টুটে। আমার হৃদয়ে সংশয় কিছুই

নাই।

গুণবতী।         শুনিয়াছি, আপনার পাপপুণ্য

আপনার কাছে। তুমি থাকো আপনার

অসংশয় নিয়ে — আমারে দুয়ার ছাড়ো,

আমার পূজার বলি আমি নিয়ে যাই

আমার মায়ের কাছে।

গোবিন্দমাণিক্য।                         দেবী, জননীর

আজ্ঞা পারি না লঙ্ঘিতে।

গুণবতী।                         আমিও পারি না।

মা ' র কাছে আছি প্রতিশ্রুত। সেইমত

যথাশাস্ত্র যথাবিধি পূজিব তাঁহারে।

যাও, তুমি যাও!

গোবিন্দমাণিক্য।             যে আদেশ মহারানী!

[ প্রস্থান

রঘুপতির প্রবেশ

 

গুণবতী।     ঠাকুর, আমার পূজা ফিরায়ে দিয়েছে

মাতৃদ্বার হতে!

রঘুপতি।                 মহারানী, মা'র পূজা

ফিরে গেছে, নহে সে তোমার। উঞ্ছবৃত্ত

দরিদ্রের ভিক্ষালব্ধ পূজা, রাজেন্দ্রাণী,