বিসর্জন

তোমার পূজার চেয়ে ন্যূন নহে। কিন্তু,

এই বড়ো সর্বনাশ, মা ' র পূজা ফিরে

গেছে। এই বড়ো সর্বনাশ, রাজদর্প

ক্রমে স্ফীত হয়ে, করিতেছে অতিক্রম

পৃথিবীর রাজত্বের সীমা — বসিয়াছে

দেবতার দ্বার রোধ করি, জননীর

ভক্তদের প্রতি দুই আঁখি রাঙাইয়া।

গুণবতী।কী হবে ঠাকুর!

রঘুপতি।                     জানেন তো মহামায়া।

এই শুধু জানি – যে সিংহাসনের ছায়া

পড়েছে মায়ের দ্বারে, ফুৎ কারে ফাটিবে

সেই দম্ভমঞ্চখানি জলবিম্বসম।

যুগে যুগে রাজপিতাপিতামহ মিলে

ঊর্ধ্ব-পানে তুলিয়াছে যে রাজমহিমা

অভ্রভেদী ক ' রে, মুহূর্তে হইয়া যাবে

ধূলিসাৎ, বজ্রদীর্ণ, দগ্ধ, ঝঞ্ঝাহত।

গুণবতী।     রক্ষা করো, রক্ষা করো প্রভু!

রঘুপতি।                         হা হা! আমি

রক্ষা করিব তোমারে! যে প্রবল রাজা

স্বর্গে মর্তে প্রচারিছে আপন শাসন

তুমি তাঁরি রানী! দেব-ব্রাহ্মণের যিনি —

ধিক্‌, ধিক্‌ শতবার! ধিক্‌ লক্ষবার!

কলির ব্রাহ্মণে ধিক্‌। ব্রহ্মশাপ কোথা!

ব্যর্থ ব্রহ্মতেজ শুধু বক্ষে আপনার

আহত বৃশ্চিক-সম আপনি দংশিছে!

মিথ্যা ব্রহ্ম-আড়ম্বর!

 

পৈতা ছিঁড়িতে উদ্যত

 

গুণবতী।                 কী কর! কী কর

দেব! রাখো, রাখো, দয়া করো নির্দোষীরে!

রঘুপতি।     ফিরায়ে দে ব্রাহ্মণের অধিকার।

গুণবতী।                         দিব।

যাও প্রভু, পূজা করো মন্দিরেতে গিয়ে,