বিসর্জন

হবে নাকো পূজার ব্যাঘাত।

রঘুপতি।                                 যে আদেশ

রাজ-অধীশ্বরী! দেবতা কৃতার্থ হল

তোমারি আদেশ-বলে, ফিরে পেল পুন

ব্রাহ্মণ আপন তেজ! ধন্য তোমরাই,

যতদিন নাহি জাগে কল্কি-অবতার।

[ প্রস্থান

গোবিন্দমাণিক্যের পুনঃপ্রবেশ

 

গোবিন্দমাণিক্য।   অপ্রসন্ন প্রেয়সীর মুখ, বিশ্বমাঝে

সব আলো সব সুখ লুপ্ত করে রাখে।

উন্মনা-উৎসুক-চিত্তে ফিরে ফিরে আসি।

গুণবতী।     যাও, যাও। এসো না এ গৃহে। অভিশাপ

আনিয়ো না হেথা।

গোবিন্দমাণিক্য।                          প্রিয়তমে, প্রেমে করে

অভিশাপ নাশ, দয়া করে অকল্যাণ

দূর। সতীর হৃদয় হতে প্রেম গেলে

পতিগৃহে লাগে অভিশাপ।– যাই তবে

দেবী!

গুণবতী।     যাও! ফিরে আর দেখায়ো না মুখ।

গোবিন্দমাণিক্য।   স্মরণ করিবে যবে, আবার আসিব

[ প্রস্থানোন্মুখ

 

পায়ে পড়িয়া

 

গুণবতী।     ক্ষমা করো, ক্ষমা করো নাথ! এতই কি

হয়েছ নিষ্ঠুর, রমণীর অভিমান

ঠেলে চলে যাবে? জান না কি প্রিয়তম,

ব্যর্থ প্রেম দেখা দেয় রোষের ধরিয়া

ছদ্মবেশ! ভালো, আপনার অভিমানে

আপনি করিনু অপমান ক্ষমা করো!

গোবিন্দমাণিক্য।   প্রিয়তমে, তোমা-'পরে টুটিলে বিশ্বাস

সেই দণ্ডে টুটিত জীবনবন্ধ। জানি

প্রিয়ে, মেঘ ক্ষণিকের, চিরদিবসের

সূর্য।