বিসর্জন

ফেলিবি ভূতলে? এই বন্ধ করে দিনু

দ্বার, এই নে আমার তরবারি, মার্‌

অবারিত বক্ষে, পূর্ণ হোক মনস্কাম!

নক্ষত্ররায়।   ক্ষমা করো! ক্ষমা করো ভাই! ক্ষমা করো!

গোবিন্দমাণিক্য।   এসো বৎস, ফিরে এসো! সেই বক্ষে ফিরে

এসো! ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছ? এ সংবাদ

শুনেছি যখন, তখনি করেছি ক্ষমা।

তোরে ক্ষমা না করিতে অক্ষম যে আমি।

নক্ষত্ররায়।   রঘুপতি দেয় কুমন্ত্রণা। রক্ষ মোরে

তার কাছ হতে।

গোবিন্দমাণিক্য।                       কোনো ভয় নেই ভাই!


তৃতীয় দৃশ্য
অন্তঃপুরকক্ষ
গুণবতী

গুণবতী।     তবু তো হল না। আশা ছিল মনে মনে

কঠিন হইয়া থাকি কিছুদিন যদি

তাহা হলে আপনি আসিবে ধরা দিতে

প্রেমের তৃষায়। এত অহংকার ছিল

মনে। মুখ ফিরে থাকি। কথা নাহি কই,

অশ্রুও ফেলি নে, শুধু শুষ্ক রোষ, শুধু

অবহেলা — এমন তো কতদিন গেল!

শুনেছি নারীর রোষ পুরুষের কাছে

শুধু শোভা আভাময়, তাপ নাহি তাহে —

হীরকের দীপ্তিসম! ধিক্‌ থাক্‌ শোভা!

এ রোষ বজ্রের মতো হত যদি, তবে

পড়িত প্রাসাদ-'পরে, ভাঙিত রাজার

নিদ্রা, চূর্ণ হত রাজ-অহংকার, পূর্ণ

হত রানীর মহিমা! আমি রানী, কেন

জন্মাইলে এ মিথ্যা বিশ্বাস! হৃদয়ের