বিসর্জন

অপর্ণার প্রবেশ


দূর হ, দূর হ মায়াবিনী, —

জয়সিংহে চাস তুই? আরে সর্বনাশী!

মহাপাতকিনী!

[ অপর্ণার প্রস্থান

                    এ কী অকাল-ব্যাঘাত!

জয়সিংহ যদি নাই আসে! কভু নহে।

সত্যভঙ্গ কভু নাহি হবে তার।– জয়

মহাকালী, সিদ্ধিদাত্রী, জয় ভয়ংকরী! —

যদি বাধা পায় — যদি ধরা পড়ে শেষে —

যদি প্রাণ যায় তার প্রহরীর হাতে! —

জয় মা অভয়া, জয় ভক্তের সহায়!

জয় মা জাগ্রত দেবী, জয় সর্বজয়া!

ভক্তবৎসলার যেন দুর্নাম না রটে

এ সংসারে, শত্রুপক্ষ নাহি হাসে যেন

নিঃশঙ্ক কৌতুকে। মাতৃ-অহংকার যদি

চূর্ণ হয় সন্তানের, মা বলিয়া তবে

কেহ ডাকিবে না তোরে। ওই পদধ্বনি!

জয়সিংহ বটে! জয় নৃমুণ্ডমালিনী,

পাষণ্ডদলনী মহাশক্তি!

জয়সিংহের দ্রুত প্রবেশ

জয়সিংহ,

রাজরক্ত কই?

জয়সিংহ।    আছে আছে! ছাড়ো মোরে।

নিজে আমি করি নিবেদন।–

                          রাজরক্ত

চাই তোর, দয়াময়ী, জগৎ পালিনী

মাতা? নহিলে কিছুতে তোর মিটিবে না

তৃষা? আমি রাজপুত, পূর্ব পিতামহ

ছিল রাজা, এখনো রাজত্ব করে মোর

মাতামহবংশ — রাজরক্ত আছে দেহে।