বনবাণী
শরৎশিশিরে যখন সে ঝলমলি
      শিহরায় পাতে পাতে।
 
ভুবনে ভুবনে যে প্রাণ সীমানাহারা
গগনে গগনে সিঞ্চিল গ্রহতারা
পল্লবপুটে ধরি লয় তারি ধারা,
      মজ্জায় লহে ভরি।
কী নিবিড় যোগ এই বাতাসের সনে,
যেন সে পরশ পায় জননীর স্তনে,
সে পুলকখানি কত-যে, সে মোর মনে
      বুঝিব কেমন করি।
 
বাতাসে আকাশে আলোকের মাঝখানে —
ঋতুর হাতের মায়ামন্ত্রের টানে
কী-যে বাণী আছে প্রাণে প্রাণে ওই জানে,
      মন তা জানিবে কিসে।
যে ইন্দ্রজাল দ্যুলোকে ভূলোকে ছাওয়া,
বুকের ভিতর লাগে ওর তারি হাওয়া —
বুঝিতে যে চাই কেমন সে ওর পাওয়া,
      চেয়ে থাকি অনিমি ষে।
 
ফুলের গুচ্ছে আজি ও উচ্ছ্বসিত,
নিখিলবাণীর রসের পরশামৃত
গোপনে গোপনে পেয়েছে অপরিমিত
      ধরিতে না পারে তারে।
ছন্দে গন্ধে রূপ-আনন্দে ভরা,
ধরণীর ধন গগণের মন-হরা,
শ্যামলের বীণা বাজিল মধুস্বরা
      ঝংকারে ঝংকারে।
 
আমার দুয়ারে এসেছিল নাম ভুলি
পাতা-ঝলমল অঙ্কুরখানি তুলি