চিত্রা

বাজায়ে শিরার তন্ত্রে। ফাটুক হৃদয়

ভূমানন্দে — ব্যাপ্ত হয়ে যাক শূন্যময়

গানের তানের মতো। একরাত্রি-তরে

হে অমরী, অমর করিয়া দাও মোরে।

 

তোমাদের বাসরকুঞ্জের বহির্দ্বারে

বসে আছি — কানে আসিতেছে বারে বারে

মৃদুমন্দ কথা, বাজিতেছে সুমধুর

রিনিঝিনি রুনুঝুনু সোনার নূপুর —

কার কেশপাশ হতে খসি পুষ্পদল

পড়িছে আমার বক্ষে, করিছে চঞ্চল

চেতনাপ্রবাহ। কোথায় গাহিছ গান।

তোমরা কাহারা মিলি করিতেছ পান

কিরণকনকপাত্রে সুগন্ধি অমৃত,

মাথায় জড়ায়ে মালা পূর্ণবিকশিত

পারিজাত — গন্ধ তারি আসিছে ভাসিয়া

মন্দ সমীরণে — উন্মাদ করিছে হিয়া

অপূর্ব বিরহে। খোলো দ্বার, খোলো দ্বার।

তোমাদের মাঝে মোরে লহো একবার

সৌন্দর্যসভায়। নন্দনবনের মাঝে

নির্জন মন্দিরখানি — সেথায় বিরাজে

একটি কুসুমশয্যা, রত্নদীপালোকে

একাকিনী বসি আছে নিদ্রাহীন চোখে

বিশ্বসোহাগিনী লক্ষ্মী, জ্যোতির্ময়ী বালা —

আমি কবি তারি তরে আনিয়াছি মালা।