পলাতকা

       আকাশ যেন শুধায় তাকে —

     যার কথা সে ভাবে কী তার নাম।

     আমি তারে যখন শুধালাম —

“ মালার আশায় যাও বুঝি ওই হাতে নিয়ে শূন্য তোমার ডালা?”

     সে বলে, “ ভাই, চাই নে বিজয়মালা। ”

 

          তারে দেখে সবাই হাসে ;

   মনে ভাবে, “ এও কেন মোদের সাথে আসে

        আশা করার ভরসাও যার নাইকো মনে,

            আগে হতেই হার মেনে যে চলে রণে। ”

                সবার তরে জায়গা সে দেয় মেলে,

আগেভাগে যাবার লাগি ছুটে যায় না আর-সবারে ঠেলে।

          কিন্তু নিত্য সজাগ থাকে ;

পথ চলেছে যেন রে কার বাঁশির অধীর ডাকে

     হাতে নিয়ে রিক্ত আপন থালা ;

     তবু বলে, চায় না বিজয়মালা।

 

 

সিংহাসনে একলা বসে রানী

          মূর্তিমতী বাণী।

ঝংকারিয়া গুঞ্জরিয়া সভার মাঝে

     আমার বীণা বাজে।

  কখনো বা দীপক রাগে

          চমক লাগে,

    তারাবৃষ্টি করে ;

কখনো বা মল্লারে তার অশ্রুধারার পাগল-ঝোরা ঝরে।

     আর-সকলে গান শুনিয়ে নতশিরে

     সন্ধ্যাবেলার অন্ধকারে ধীরে ধীরে

             গেছে ঘরে ফিরে।

     তারা জানে, যেই ফুরাবে আমার পালা,

          আমি পাব রানীর বিজয়মালা।