মানসী
রাখালশিশুরা
জুটে
নাচে গায় খেলে ছুটে,
দূরে তরী চলিয়াছে ভাসি।
কত কাজ কত
খেলা
কত মানবের মেলা,
সুখদুঃখ ভাবনা অশেষ—
তারি মাঝে
কুহুস্বর
একতান সকাতর
কোথা
হতে লভিছে প্রবেশ।
নিখিল করিছে
মগ্ন—
জড়িত মিশ্রিত ভগ্ন
গীতহীন কলরব কত,
পড়িতেছে
তারি’পর
পরিপূর্ণ সুধাস্বর
পরিস্ফুট পুষ্পটির মতো।
এত কাণ্ড, এত
গোল,
বিচিত্র এ কলরোল
সংসারের আবর্তবিভ্রমে—
তবু সেই
চিরকাল
অরণ্যের অন্তরাল
কুহুধ্বনি ধ্বনিছে পঞ্চমে।
যেন কে বসিয়া
আছে
বিশ্বের বক্ষের কাছে
যেন কোন্ সরলা সুন্দরী,
যেন সেই
রূপবতী
সংগীতের সরস্বতী
সম্মোহন-বীণা করে ধরি’—
সুকুমার কর্ণে
তার
ব্যথা দেয় অনিবার
গণ্ডগোল দিবসে নিশীথে,
জটিল সে
ঝঞ্ঝনায়
বাঁধিয়া তুলিতে চায়
সৌন্দর্যের সরল সংগীতে।
তাই ওই
চিরদিন
ধ্বনিতেছে শ্রান্তিহীন
কুহুতান, করিছে কাতর—
সংগীতের ব্যথা
বাজে,
মিশিয়াছে তার মাঝে
করুণার অনুনয়স্বর।
কেহ বসে
গৃহমাঝে,
কেহ বা চলেছে কাজে,
কেহ শোনে, কেহ নাহি শোনে—
তবুও সে কী
মায়ায়
ওই ধ্বনি থেকে যায়
বিশ্বব্যাপী মানবের মনে।
তবু
যুগ-যুগান্তর
মানবজীবনস্তর
ওই গানে আর্দ্র হয়ে আসে,