কড়ি ও কোমল

          হাসে কাঁদে কত কে যে নাহি যায় গণা।

আমাদের পানে হায়               ভুলেও তো নাহি চায়,

          মোদের ওরা তো কেউ ভাই বলিবে না

          ওই - সব মধুমুখ অমৃত - সদন,

          না জানি রে আর কারা করিবে চুম্বন।

শরমময়ীর পাশে                    বিজড়িত আধ - ভাষে

          আমরা তো শুনাব না প্রাণের বেদন।

          আমাদের খেলাঘরে কারা খেলাইছ!

সাঙ্গ না হইতে খেলা               চলে এনু সন্ধেবেলা,

          ধূলির সে ঘর ভেঙে কোথা ফেলাইছ।

          হোথা, যেথা বসিতাম মোরা দুই জন,

          হাসিয়া কাঁদিয়া হত মধুর মিলন,

মাটিতে কাটিয়া রেখা              কত লিখিতাম লেখা,

          কে তোরা মুছিলি সেই সাধের লিখন।

          সুধাময়ী মেয়েটি সে হোথায় লুটিত,

          চুমো খেলে হাসিটুকু ফুটিয়া উঠিত।

তাই রে মাধবীলতা                 মাথা তুলেছিল হোথা,

          ভেবেছিনু চিরদিন রবে মুকুলিত।

          কোথায় রে, কে তাহারে করিলি দলিত।

         

          ওই যে শুকানো ফুল ছুঁড়ে ফেলে দিলে

          উহার মরম - কথা বুঝিতে নারিলে।

ও যেদিন ফুটেছিল                নব রবি উঠেছিল,

          কানন মাতিয়াছিল বসন্ত - অনিলে।

          ওই যে শুকায় চাঁপা পড়ে একাকিনী,

           তোমরা তো জানিবে না উহার কাহিনী।

কবে কোন্‌ সন্ধেবেলা    ওরে তুলেছিল বালা

          ওরি মাঝে বাজে কোন্‌ পূরবীরাগিণী।

          যারে দিয়েছিল ওই ফুল উপহার

          কোথায় সে গেছে চলে, সে তো নেই আর।

একটু কুসুমকণা                    তাও নিতে পারিল না,

           ফেলে রেখে যেতে হল মরণের পার ;