পূরবী
                   প্রভাত-রবির শঙ্খ বাজে,
         আলোর ধারায় গানের ধারা মেশে;
                   এইখানে সে পূজার কালে
                   সন্ধ্যারতির প্রদীপ জ্বালে
         শান্ত মনে ক্লান্ত দিনের শেষে।
                   হেথা হতে গেলেম দূরে
                   কোথা যে ইঁটকাঠের পুরে
         বেড়া-ঘেরা বিষম নির্বাসনে;
                   তৃপ্তি যে নাই, কেবল নেশা,
                   ঠেলাঠেলি, নাই তো মেশা,
         আবর্জনা জমে উপার্জনে।
                   যন্ত্র-জাঁতায় পরান কাঁদায়,
                   ফিরি ধনের গোলকধাঁধায়,
         শূন্যতারে সাজাই নানা সাজে;
                   পথ বেড়ে যায় ঘুরে ঘুরে,
                   লক্ষ্য কোথায় পালায় দূরে,
         কাজ ফলে না অবকাশের মাঝে।


                   যাই ফিরে যাই মাটির বুকে,
                   যাই চলে যাই মুক্তি-সুখে,
         ইঁটের শিকল দিই ফেলে দিই টুটে;
                   আজ ধরণী আপন হাতে
                   অন্ন দিলেন আমার পাতে,
         ফল দিয়েছেন সাজিয়ে পত্রপুটে।
                   আজকে মাঠের ঘাসে ঘাসে
                   নিশ্বাসে মোর খবর আসে
         কোথায় আছে বিশ্বজনের প্রাণ;
                   ছয় ঋতু ধায় আকাশ-তলায়,
                   তার সাথে আর আমার চলায়
         আজ হতে না রইল ব্যবধান।