সুসময়

       বৈশাখী ঝড় যতই আঘাত হানে

      সন্ধ্যা-সোনার ভাণ্ডারদ্বার-পানে,

           দস্যুর বেশে যতই করে সে দাবি —

           কুণ্ঠিত মেঘ হারায় সোনার চাবি,

      গগন সঘন অবগুন্ঠন টানে।

 

      ‘ খোলো খোলো মুখ ' বনলক্ষ্মীরে ডাকে,

      নিবিড় ধুলায় আপনি তাহারে ঢাকে।

           ‘ আলো দাও ' হাঁকে, পায় না কাহারো সাড়া,

           আঁধার বাড়ায়ে বেড়ায় লক্ষ্মীছাড়া —

      পথ সে হারায় আপন ঘূর্ণিপাকে।

 

      তার পরে যবে শিউলিফুলের বাসে

      শরৎলক্ষ্মী শুভ্র আলোয় ভাসে,

           নদীর ধারায় নাই মিছে মত্ততা,

           কুন্দকলির স্নিগ্ধশীতল কথা,

      মৃদু উচ্ছ্বাস মর্মরে ঘাসে ঘাসে —

 

      শিশির যখন বেণুর পাতার আগে

      রবির প্রসাদ নীরব চাওয়ায় মাগে,

           সবুজ খেতের নবীন ধানের শিষে

       ঢেউ খেলে যায় আলোকছায়ায় মিশে,

      গগনসীমায় কাশের কাঁপন লাগে —

 

      হঠাৎ তখন সূর্যডোবার কালে

      দীপ্তি লাগায় দিক্‌ললনার ভালে,

           মেঘ ছেঁড়ে তার পর্দা আঁধার-কালো,

           কোথায় সে পায় স্বর্গলোকের আলো,

      চরম খনের পরম প্রদীপ জ্বালে।