আকাশপ্রদীপ
                 এমন সময় আসে কাকের দল,
                        খাদ্যকণায় ঠোকর মেরে দেখে কী হয় ফল।
                            একটুখানি যাচ্ছে সরে আসছে আবার কাছে,
                                   উড়ে গিয়ে বসছে তেঁতুলগাছে।
                       বাঁকিয়ে গ্রীবা ভাবছে বারংবার,
                 নিরাপদের সীমা কোথায় তার।
                       এবার মনে হয়,
                 এতক্ষণে পরস্পরের ভাঙল সমন্বয়।
                 কাকের দলের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিৎ মন
                       সন্দেহ আর সতর্কতায় দুলছে সারাক্ষণ।
                            প্রথম হল মনে,
                       তাড়িয়ে দেব ; লজ্জা হল তারি পরক্ষণে —
                 পড়ল মনে, প্রাণের যজ্ঞে ওদের সবাকার
                            আমার মতোই সমান অধিকার।
                       তখন দেখি, লাগছে না আর মন্দ
                 সকালবেলার ভোজের সভায়
                                  কাকের নাচের ছন্দ।
 
          এই যে বহায় ওরা
                       প্রাণস্রোতের পাগ্‌লাঝোরা,
                             কোথা হতে অহরহ আসছে নাবি
                                        সেই কথাটাই ভাবি।
                       এই খুশিটার স্বরূপ কী যে, তারি
                                        রহস্যটা বুঝতে নাহি পারি।
                       চটুলদেহ দলে দলে
                  দুলিয়ে তোলে যে আনন্দ খাদ্যভোগের ছলে,
                       এ তো নহে এই নিমেষের সদ্য চঞ্চলতা,
                            অগণ্য এ কত যুগের অতি প্রাচীন কথা।
                 রন্ধ্রে রন্ধ্রে হাওয়া যেমন সুরে বাজায় বাঁশি,
                       কালের বাঁশির মৃত্যুরন্ধ্রে সেই মতো উচ্ছ্বাসি
                            উৎসারিছে প্রাণের ধারা।
                 সেই প্রাণেরে বাহন করি আনন্দের এই তত্ত্ব অন্তহারা