সেঁজুতি

          দেখেছি কুশ্রীতারে,

মানুষের প্রাণে বিষ মিশায়েছে মানুষ আপন হাতে,

          ঘটেছে তা বারে বারে।

                   তবু তো বধির করে নি শ্রবণ কভু,

                    বেসুর ছাপায়ে কে দিয়েছে সুর আনি ;

                   পুরুষকলুষ ঝঞ্ঝায় শুনি তবু

                   চিরদিবসের শান্ত শিবের বাণী।

 

যাহা জানিবার কোনোকালে তার জেনেছি যে কোনোকিছু

          কে তাহা বলিতে পারে —

সকল পাওয়ার মাঝে না-পাওয়ার চলিয়াছি পিছু পিছু

           অচেনার অভিসারে।

                   অবুও চিত্ত অহেতু আনন্দেতে

                   বিশ্বনৃত্যলীলায় উঠেছে মেতে ;

                   সেই ছন্দেই মুক্তি আমার পাব,

                   মৃত্যুর পথে মৃত্যু এড়ায়ে যাব।

 

ওই শুনি আমি চলেছে আকাশে বাঁধন-ছেঁড়ার রবে

           নিখিল আত্মহারা ;

ওই দেখি আমি অন্তবিহীন সত্তার উৎসবে

          ছুটেছে প্রাণের ধারা।

                   সে ধারার বেগ লেগেছে আমার মনে

                   এ ধরণী হতে বিদায় নেবার ক্ষণে ;

                   নিবায়ে ফেলিব ঘরের কোণের বাতি,

                   যাব অলক্ষ্যে সূর্যতারার সাথি।

 

কী আছে জানি না দিন-অবসানে মৃত্যুর অবশেষে ;

                   এ প্রাণের কোনো ছায়া

শেষ আলো দিয়ে ফেলিবে কি রঙ অন্তরবির দেশে,

                   রচিবে কি কোনো মায়া।

                             জীবনেরে যাহা জেনেছি অনেক তাই ;

                              সীমা থাকে থাক্‌, তবু তার সীমা নাই।

                             নিবিড় তাহার সত্য আমার প্রাণে

                             নিখিল ভুবন ব্যাপিয়া নিজেরে জানে।