শ্যামলী

                          এলিয়ে - পড়া দেহটা—

                     ডাঙায় - তোলা ভাঙা নৌকোটা যেন।

                বুঝি সাবধানেই গেছ চলে,

                           ঘুম ভাঙে পাছে।

                চমকে জেগে উঠেই বুঝেছি

                           মিছে হয়েছে জাগা।

                বুঝেছি, যা যাবার তা গেছে এক নিমেষেই—

                           যা পড়ে থাকবার তাই রইল পড়ে

                                        যুগযুগান্তর।

 

                           চুপচাপ চারি দিক—

                যেমন চুপচাপ পাখিহারা পাখির বাসা।

                           গানহারা গাছের ডালে।

     কৃষ্ণসপ্তমীর মিইয়ে - পড়া জ্যোৎস্নার সঙ্গে মিশেছে

                         ভোরবেলাকার ফ্যাকাশে আলো,

      ছড়িয়ে পড়েছে আমার পাঙাশ - বরণ শূন্য জীবনে।

 

           গেলেম তোমার শোবার ঘরের দিকে

                            বিনা কারণে।

                       দরজার বাইরে জ্বলছে

             ধোঁওয়ায় - কালি - পড়া হারিকেন লণ্ঠন,

                বারান্দায় নিবো - নিবো শিখার গন্ধ।

         ছেড়ে - আসা বিছানায় খোলা মশারি

             একটু একটু কাঁপছে বাতাসে।

                জানলার বাইরের আকাশে

                          দেখা যায় শুকতারা,

                       আশা - বিদায় করা

                           যত ঘুমহারাদের সাক্ষী।

                   হঠাৎ দেখি ফেলে গেছ ভুলে

         সোনাবাঁধানো হাতির দাঁতের লাঠিগাছটা।

                       মনে হল, যদি সময় থাকে

    তবে হয়তো স্টেশন থেকে ফিরে আসবে খোঁজ করতে—

                       কিন্তু ফিরবে না

              আমার সঙ্গে দেখা হয় নি বলে।