শ্যামলী

       কোন্‌ আদিকালে মানুষ এসে দাঁড়িয়েছে

                 বিশ্বপথের চৌমাথায়।

            পাথেয় ছিল রক্তে, পাথেয় ছিল স্বপ্নে,

                     পাথেয় ছিল পথেই।

                           যেই এঁকেছে নক্‌শা,

                                 ঘর বেঁধেছে পাকা গাঁথুনির,

                                      ছাদ তুলেছে মেঘ ঘেঁষে _

                            পরের দিন থেকে মাটির তলায়

                                      ভিত হয়েছে ঝাঁঝরা।

                   সে বাঁধ বেঁধেছে পাথরে পাথরে,

                          তলিয়ে গেছে বন্যার ধাক্কায়।

           সারারাত হিসেব করেছে স্থাবর সম্পদের,

                    রাতের শেষে হিসেবে বেরোল সর্বনাশ।

      সে জমা করেছে ভোগের ধন সাত হাট থেকে,

                ভোগে লেগেছে আগুন,

                     আপন তাপে গুমরে গুমরে

                গেছে ভোগের জোগান আঙার হয়ে।

           তার রীতি, তার নীতি, তার শিকল, তার খাঁচা

                            চাপা পড়েছে মাটির নীচে।

                                পরযুগের কবরস্থানে।

 

         কখনো বা ঘুমিয়েছে সে

           ঝিমিয়ে - পড়া নেশার আসরে বাতি - নেবা দালানে

                   আরামের গদি পেতে।

              অন্ধকারে ঝোপের থেকে

                    ঝাঁপিয়ে পড়েছে স্কন্ধকাটা দুঃস্বপ্ন,

              পাগ্‌লা জন্তুর মতো

                   গোঁ গোঁঃ শব্দে ধরেছে তার টুঁটি চেপে,

                বুকের পাঁজরগুলোয় ঠক ঠক দিয়েছে নাড়া,

                   গুঙরে উঠে জেগেছে সে মৃত্যুযন্ত্রণায়।

         ক্ষোভের মাতুনিতে ভেঙে ফেলেছে মদের পাত্র,

              ছিঁড়ে ফেলেছে ফুলের মালা।