শ্যামলী

                   মরা দিনের নাড়ীর মধ্যে

                 দব্‌দবিয়ে ফিরে আসে প্রাণের বেগ।

 

      কী বাজাও তুমি,

জানি নে সে সুর জাগায় কার মনে কী ব্যথা।

      বুঝি বাজাও পঞ্চমরাগে

দক্ষিণ হাওয়ার নবযৌবনের ভাটিয়ারি।

      শুনতে শুনতে নিজেকে মনে হয় —

            যে ছিল পাহাড়তলির ঝির্‌ঝিরে নদী,

                 তার বুকে হঠাৎ উঠেছে ঘনিয়ে

                       শ্রাবণের বাদলরাত্রি।

সকালে উঠে দেখা যায় পাড়ি গেছে ভেসে,

      একগুঁয়ে পাথরগুলোকে ঠেলা দিচ্ছে

            অসহ্য স্রোতের ঘূর্ণি - মাতন।

 

আমার রক্তে নিয়ে আসে তোমার সুর—

   ঝড়ের ডাক, বন্যার ডাক, আগুনের ডাক,

      পাঁজরের উপরে আছাড় - খাওয়া

            মরণ - সাগরের ডাক,

      ঘরের শিকল - নাড়া উদাসী হাওয়ার ডাক।

         যেন হাঁক দিয়ে আসে

            অপূর্ণের সংকীর্ণ খাদে

                 পূর্ণ স্রোতের ডাকাতি,

            ছিনিয়ে নেবে, ভাসিয়ে দেবে বুঝি।

         অঙ্গে অঙ্গে পাক দিয়ে ওঠে

                   কালবৈশাখীর ঘূর্ণি - মার - খাওয়া

                        অরণ্যের বকুনি।

 

    ডানা দেয় নি বিধাতা,

তোমার গান দিয়েছে আমার স্বপ্নে

      ঝোড়ো আকাশে উড়ো প্রাণের পাগলামি।

              ঘরে কাজ করি শান্ত হয়ে ;