রাজা
            আঁধারে গিয়েছে হারায়ে।
তোমারি দুয়ারে          এসেছি, আমারে
            বাহিরে রেখো না দাঁড়ায়ে॥
সুরঙ্গমা। তোমার দুয়োর কে বন্ধ রাখতে পারে রাজা! ও তো বন্ধ নেই, কেবল ভেজানো আছে; একটু ছোঁও যদি আপনি খুলে যাবে। সেটুকুও করবে না? নিজে উঠে গিয়ে না খুলে দিলে ঢুকবে না?
গান
এ যে মোর আবরণ
ঘুচাতে কতক্ষণ।
নিশ্বাসবায়ে        উড়ে চলে যায়
তুমি কর যদি মন।
যদি পড়ে থাকি ভূমে
ধুলার ধরণী চুমে,
তুমি তারি লাগি        দ্বারে রবে জাগি
এ কেমন তব পণ।
রথের চাকার রবে
জাগাও জাগাও সবে,
আপনার ঘরে         এসো বলভরে
এসো এসো গৌরবে।
ঘুম টুটে যাক চলে,
চিনি যেন প্রভু বলে—
ছুটে এসে দ্বারে        করি আপনারে
চরণে সমর্পণ॥

রানী, যাও তবে, দরজাটা খুলে দাও, নাইলে আসবেন না।

সুদর্শনা। আমি এ ঘরের অন্ধকারে কিছুই ভালো করে দেখতে পাই নে— কোথায় দরজা কে জানে। তুই এখানকার সব জানিস, তুই আমার হয়ে খুলে দে।

[সুরঙ্গমার দ্বার-উদ্‌ঘাটন, প্রণাম ও প্রসথান

তুমি আমাকে আলোয় দেখা দিচ্ছ না কেন।

(১)রাজা। আলোয় তুমি হাজার হাজার জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে আমাকে দেখতে চাও? এই গভীর অন্ধকারে আমি তোমার একমাত্র হয়ে থাকি-না কেন।

সুদর্শনা। সবাই তোমাকে দেখতে পায়, আমি রানী হয়ে দেখতে পাব না?

রাজা। কে বললে দেখতে পায়। মূঢ় যারা তারা মনে করে ‘দেখতে পাচ্ছি’।

সুদর্শনা। তা হোক, আমাকে দেখা দিতেই হবে।


রাজাকে এ নাটকের কোথাও রঙ্গমঞ্চে দেখা যাইবে না।