সন্ধ্যাসংগীত

সুকুমার ফুলটির মর্মের মাঝারে

মরণের কীট পশি করিতেছে ক্ষয়!

হইল প্রফুল্লতর মুখখানি তার,

হইল প্রশান্ততর হাসিটি তাহার,

দিবা যবে যায় যায়, হাসিময় মেঘে

দূর আঁধারের মুখ করয়ে উজ্জ্বল —

এ হাসি তেমনি হাসি কে জানিত তাহা!

একদা পূর্ণিমারাত্রে নিস্তব্ধ গভীর

মুখপানে চেয়ে বালা, হাত ধরি মোর

কহিল মৃদুলস্বরে — ‘ যাই তবে ভাই!’

কোথা গেলি — কোথা গেলি মালতী আমার

অভাগা ভ্রাতারে তোর রাখিয়া হেথায়!

দুঃখের কণ্টকময় সংসারের পথে

মালতী, কে লয়ে যাবে হাত ধরি মোর?

সংসারের ধ্রুবতারা ডুবিল আমার।

তেমন পূর্ণিমা রাত্রি দেখি নি কখনো,

পৃথিবী ঘুমাইতেছে শান্ত জোছনায় ;

কহিনু পাগল হয়ে — ‘ রাক্ষসী পৃথিবী

এত রূপ তোরে কভু সাজে না সাজে না!’

 

মালতী শুকায়ে গেল, সুবাস তাহার

এখনো রয়েছে কিন্তু ভরিয়া কুটির।

তাহার মনের ছায়া এখনো যেন রে

সে কুটিরে শান্তিরসে রেখেছে ডুবায়ে!

সে শান্ত প্রতিমা মম মনের মন্দির

রেখেছে পবিত্র করি রেখেছে উজ্জ্বলি!