প্রভাতসংগীত

                   আমি যেন দাঁড়িয়ে আছি একটা বাবলা গাছের মতো

                   বড়ো বড়ো কাঁটার ভয়ে তফাত থাকে লতা যত।

                   সকাল হলে মনের সুখে ডালে ডালে ডাকে পাখি,

আমার              কাঁটা - ডালে কেউ ডাকে না চুপ করে তাই দাঁড়িয়ে থাকি!

                   নেই বা লতা এল কাছে, নেই বা পাখি বসল শাখে,

                   যদি আমার বুকের কাছে বাবলা ফুলটি ফুটে থাকে।

                   বাতাসেতে দুলে দুলে ছড়িয়ে দেয় রে মিষ্টি হাসি,

                   কাঁটা - জন্ম ভুলে গিয়ে তাই দেখে হরষে ভাসি!

                  দূর কর ছাই, ঝোঁকের মাথায় বলে ফেললাম কত কী যে?

                   কথাগুলো ঠেকছে যেন চোখের জলে ভিজে ভিজে!

                                                        রবি কাকা।


শরতে প্রকৃতি

কই গো প্রকৃতি রানী, দেখি দেখি মুখখানি,

কেন গো বিষাদছায়া রয়েছে অধর ছুঁয়ে

মুখানি মলিন কেন গো?

এই যে মুহূর্ত আগে হাসিতে ছিলে গো দেখি

পলক না পালটিতে সহসা নেহারি এ কি—

মরনে বিলীন যেন গো!

কেন তনুখানি ঢাকা শুভ্র কুহেলিকা বাসে

মৃদু বিষাদের ভারে সুধীরে মুদিয়া আসে

নয়ন - নলিন হেন গো?

 

ওই দেখো চেয়ে দেখো—একবার চেয়ে দেখো—

চাঁদের অধর দুটি হাসিতে ভাসিয়া যায়।

নিশীথের প্রাণে গিয়া সে হাসি মিশিয়া যায়।

সে হাসির কোলে বসি কানন - গোলাপগুলি

আধো আধো কথা কহে সোহাগেতে দুলি দুলি।

সে হাসির পায়ে পড়ি নদীর লহরীগন

যার যত কথা আছে বলিতে আকুল মন।