প্রভাতসংগীত

পথিক সমীরে সব দিলি তুই বিলাইয়া!

শেষে গ্রীষ্মতাপে জ্বলি

শুকাইল ফুল - কলি,

সর্বস্ব যাহারে দিলি সেও গেল পলাইয়া!

চেতনা পাইয়া শেষে হইয়া সর্বস্ব - হারা

সারাটি বরষা তুই কাঁদিয়া হইলি সারা!

এত দিন পরে বুঝি শুকাইল অশ্রুধারা!

আজ বুঝি মনে মনে করিলি দারুন পণ

যোগিনী হইবি তুই পাষাণে বাঁধিয়া মন!

বসন্তের ছেলেখেলা ভালো নাহি লাগে আর—

চপল চঞ্চল হাসি ফুলময় অলংকার!

এখন যে হাসি হাসো আজি বিরাগের দিন,

শুভ্র শান্ত সুবিমল বাসনা - লালসাহীন।

এত করিলি পণ

তবুও তো ক্ষণে ক্ষণ

সে দিনের স্মৃতিছায়া হৃদয়ে বেড়ায় ভাসি।

প্রশান্ত মুখের ’পরে

কুহেলিকা ছায়া পড়ে—

ভাবনায় মেঘ উঠে সহসা আলোক নাশি—

মুহূর্তে কিসের লাগি

আবার উঠিস জাগি

আবার অধরে ফুটে সেই সে পুরানো হাসি!

 

ঘুমায়ে পড়িস যবে বিহ্বল রজনীশেষে,

অতি মৃদু পা টিপিয়া উষা আসে হেসে হেসে,

অতিশয় সাবধানে দুইটি আঙুল দিয়া

কুয়াশা - ঘোমটা তোর দেয় ধীরে সরাইয়া।

অমনি তরুণ রবি পাশে আসি মৃদুগতি

মুদিত নয়ন তোর চুমে ধীরে ধীরে অতি!

শিহরিয়া কাঁপি উঠি

মেলিস নয়ন দুটি,

রাঙা হয়ে ওঠে তোর কপোল - কুসুমদল