রাজা

ঠাকুরদা। বাইরে থেকে দেখাচ্ছে যেন বড়ো ভালোমানুষ। ওর সাদা চাদরটা খুলে দেখতিস যদি তা হলে ওর বিদ্যে ধরা পড়ত। চুপিচুপি ও যে আজ কত রঙ ছড়িয়েছে, এখানে দাঁড়িয়ে সব দেখেছি। অথচ ও নিজের কি এমনি সাদাই থেকে যাবে।

গান

আহা,    তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা

            প্রিয় আমার ওগো প্রিয়!

বড়ো     উতলা আজ পরান আমার

            খেলাতে হার মানবে কি ও।

কেবল    তুমিই কি গো এমনি ভাবে

            রাঙিয়ে মোরে পালিয়ে যাবে।

তুমি    সাধ করে নাথ, ধরা দিয়ে

        আমারও রঙ বক্ষে নিয়ো—

এই      হৃৎকমলের রাঙা রেণু

          রাঙাবে ওই উত্তরীয়॥

[প্রস্থান
স্ত্রীলোকদের প্রবেশ

প্রথমা। ওমা, ওমা! যেখানে দেখে গিয়েছিলুম সেইখানেই দাঁড়িয়ে আছে গো!

দ্বিতীয়া। আমাদের বসন্তপূর্ণিমার চাঁদ, এত রাত হল তবু একটুও পশ্চিমের দিকে হেলল না।

প্রথমা। আমাদের অচঞ্চল চাঁদটি কার জন্যে পথ চেয়ে আছে ভাই।

ঠাকুরদা। যে তাকে পথে বের করবে তারই জন্যে।

তৃতীয়া। ঘর ছেড়ে এবার পথের মানুষ খুঁজবে বুঝি?

ঠাকুরদা। হাঁ ভাই, সর্বনাশের জন্যে মন কেমন করছে।

গান

আমার    সকল নিয়ে বসে আছি

                সর্বনাশের আশায়।

আমি    তার লাগি পথ চেয়ে আছি।

                পথে যে জন ভাসায়।

দ্বিতীয়া। আমাদের তো পথে ভাসাবার শক্তি নেই, পথ ছেড়ে দিয়ে যাওয়াই ভালো। ধরা যে দেবে না তার কাছে ধরা দিয়ে লাভ কী।

ঠাকুরদা। তার কাছে ধরা দিলে ধরা দেওয়াও যা, ছাড়া পাওয়াও তা।

যে জন    দেয় না দেখা, যায় যে দেখে,

                ভালোবাসে আড়াল থেকে,