রাজা
          সেথা আঁচল পাতব আমার
               তোমার রাগে অনুরাগী!
আমি      শুচি আসন টেনে টেনে
          বেড়াব না বিধান মেনে—
          যে পঙ্কে ওই চরণ পড়ে
               তাহারি ছাপ বক্ষে মাগি॥


সুদর্শনার পিতা কান্যকুব্জরাজ ও মন্ত্রী

কান্যকুব্জ। সে আসবার পূর্বেই আমি সমস্ত খবর পেয়েছি।

মন্ত্রী। রাজকন্যা নগরের বাহিরে নদীকূলে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁকে অভ্যর্থনা করে আনবার জন্যে লোকজন পাঠিয়ে দিই?

কান্যকুব্জ। হতভাগিনী স্বামীকে ত্যাগ করে আসছে, অভ্যর্থনা করে তার সেই লজ্জা ঘোষণা করে দেবে? অন্ধকার হোক, রাস্তায় যখন লোক থাকবে না তখন সে গোপনে আসবে।

মন্ত্রী। প্রাসাদে তাঁর বাসের ব্যবস্থা করে দিই?

কান্যকুব্জ। কিছু করতে হবে না। ইচ্ছা ক’রে সে আপনার একেশ্বরী রানীর পদ ত্যাগ করে এসেছে— এখানে রাজগৃহে তাকে দাসীর কাজে নিযুক্ত থাকতে হবে।

মন্ত্রী। মনে বড়ো কষ্ট পাবেন।

কান্যকুব্জ। যদি তাকে কষ্ট থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করি তা হলে পিতা-নামের যোগ্য নই।

মন্ত্রী। যেমন আদেশ করেন তাই হবে।

কান্যকুব্জ। সে যে আমার কন্যা এ কথা যেন প্রকাশ না হয়— তা হলে বিষম অনর্থপাত ঘটবে!

মন্ত্রী। অনর্থের আশঙ্কা কেন করেন মহারাজ।

কান্যকুব্জ। নারী যখন আপন প্রতিষ্ঠা থেকে ভ্রষ্ট হয় তখন সংসারে সে ভয়ংকর বিপদ হয়ে দেখা দেয়। তুমি জান না, আমার এই কন্যাকে আমি আজ কী রকম ভয় করছি। সে আমার ঘরের মধ্যে শনিকে সঙ্গে করে নিয়ে আসছে।