রাজা

সুদর্শনা। না না, তিনি আসবেন না। তিনি আমাদের একবারে ছেড়ে দিয়েছেন। কেনই বা না ছাড়বেন। অপরাধ তো কম করি নি।

সুরঙ্গমা। যদি ছেড়ে দিতেই পারেন তা হলে তাঁকে আর দরকার নেই, তা হলে তিনি নেই, তা হলে আমার সেই অন্ধকার একেবারে শূন্য— তার মধ্যে থেকে বীণা বাজে নি, কেউ ডাকে নি— সমস্ত বঞ্চনা।

দ্বারীর প্রবেশ

সুদর্শনা। কে তুমি।

দ্বারী। আমি এই প্রাসাদের দ্বারী।

সুদর্শনা। কী খবর, শীঘ্র বলো।

দ্বারী। আমাদের মহারাজ বন্দী হয়েছেন।

সুদর্শনা। বন্দী হয়েছেন! মা গো বসুন্ধরা!

মূর্ছা


১৩
বন্দী কান্যকুব্জরাজ, অন্যান্য রাজগণ ও সুবর্ণ

কাঞ্চী। রাজগণ, রণক্ষেত্রের কাজ শেষ হল?

কলিঙ্গ। কই শেষ হল। বীরত্বের পুরস্কারটি গ্রহণ করবার পূর্বেই আর-একবার তো বীরত্বের পরিচয় দিতে হবে।

কাঞ্চী। মহারাজ, এখানে তো আমরা জয়মাল্য নিতে আসি নি, বরমাল্য নিতে এসেছি।

বিদর্ভ। সেই মালা কি জয়লক্ষ্মীর হাত থেকে নিতে হবে না।

কাঞ্চী। না মহারাজ, পুষ্পধনুর অন্তঃপুরেই সে মালা গাঁথা হচ্ছে। রক্ত-মাখা হাতে সেটা ছিন্ন করতে গেলে ফুল ধুলায় লুটিয়ে পড়বে।

কলিঙ্গ। কিন্তু মহারাজ, পঞ্চশর আমাদের সাতজনের দাবি মেটাবেন কী করে।

কাঞ্চী। তা যদি বলেন, সাতজনের দাবি তো রণচণ্ডীও মেটাতে পারেন না।

কোশল। কাঞ্চীরাজ, তোমার প্রস্তাবটি কী পরিষ্কার করেই বলো।

কাঞ্চী। আমার প্রস্তাব এই, স্বয়ংবরসভায় রাজকন্যা স্বয়ং যাঁর গলায় মালা দেবেন, এই বসন্তের সফলতা তিনিই লাভ করবেন।

বিদর্ভ। এ প্রস্তাব উত্তম, আমার এতে সম্মতি আছে।

সকলে। আমাদেরও আছে।

কান্যকুব্জ। রাজগণ, আমাকে বধ করুন, অথবা দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান করছি, আপনারা আসুন— আমাকে জীবিত-মৃত্যুর হাতে সমর্পণ করবেন না।

কাঞ্চী। আপনার কন্যা পতিকুল ত্যাগ করে এসেছেন। তার অধিক দুঃখ আমরা আপনাকে দিচ্ছি নে। এখন যে প্রস্তাব করলেম তাতে তিনি সম্মান লাভ করবেন।