তপতী
কর্তব্য করতে হবে তো।

সুমিত্রা। তোমার কর্তব্যই করো। দেবতার পথ রোধ কোরো না — যে পথ দিয়ে রাজার সৈন্য আসবে সেই পথ দিয়েই আমার দেবতা আমাকে উদ্ধার করতে আসবেন। যাও তুমি এখনই, মন্দিরের সিংহদ্বার খুলে দাও।

[ ভার্গবের প্রস্থান

দেবদত্ত। তাহলে শংকর তুমি থাকো, মহারানীর দূত হয়ে আমিই তাঁকে আহবান করে আনি।

[ প্রস্থান

শংকর। দিদি, রাজগৃহ থেকে সেবার তোমাকে ওরা কেড়ে নিয়ে গেল, এবার কি দেবালয় থেকে তোমাকে কেড়ে নিতে দেবে। এও কি আমরা চুপ করে সহ্য করব।

সুমিত্রা। ভয় নেই শংকর। আজ আমাকে নেবার সাধ্য কার আছে।

শংকর। তবে বলো, তোমার কী সংকল্প।

সুমিত্রা। রুদ্রের কাছে বহুদিন পূর্বে আত্মনিবেদন করেছিলুম। ব্যাঘাত ঘটেছিল, সংসার আমাকে অশুচি করেছে। তপস্যা করেছি, আমার দেহমন শুদ্ধ হয়েছে। আজ আমার সেই অনেকদিনের সংকল্প সম্পূর্ণ হবে। তাঁর পরমতেজে আমার তেজ মিলিয়ে দেব।

শংকর। আমার মোহ দূর হোক সুমিত্রা, মোহ দূর হোক। তোমাকে যেন নিবৃত্ত না করি।

[ শংকরের প্রস্থান

সুমিত্রা। বিপাশা!

বিপাশার প্রবেশ

বিপাশা। বলো দেবি।

সুমিত্রা। আমার অগ্নিশয্যা অনেকদিন থেকেই প্রস্তুত হচ্ছে, তুমি দেখেছ বহুদুঃখের সেই আয়োজন। আজ সময় হয়েছে, আনন্দ করো, জ্বলুক শিখা, বিলম্ব কোরো না।

বিপাশা। যে আদেশ দেবি।

[পায়ের কাছে মাথা রেখে পড়ে রইল

সুমিত্রা। ওঠ্‌ বিপাশা, এবার আমার শেষ পূজা করি। অর্ঘ্য প্রস্তুত আছে?

বিপাশা। আছে, দেবী।

পদ্মের অর্ঘ্য হাতে সুমিত্রা

বিপাশা।                                              গান

শুভ্র নবশঙ্খ তব গগন ভরি বাজে,
      ধ্বনিল শুভ জাগরণ-গীত।
অরুণরুচি আসনে চরণ তব রাজে,
      মম হৃদয়কমল বিকশিত।
            গ্রহণ করো তারে
            তিমির পরপারে,