প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
বাঁশরি। সে আছে বাওয়ান্ন বাঁও জলের নীচে। তোমার এলাকার বাইরে, সেখানে তোমার মন্দাকিনী-পদ্মাবতীর ডুবসাঁতার চলে না। আভাস পেয়েছি কোন্ ডাকঘর-বিবর্জিত দেশে ও এক সংঘ বানিয়েছে, তরুণতাপসসংঘ, সেখানে নানা পরীক্ষায় মানুষ তৈরি হচ্ছে।
ক্ষিতিশ। কিন্তু, তরুণী?
বাঁশরি। ওর মতে গৃহেই নারী, কিন্তু পথে নয়।
ক্ষিতিশ। তা হলে সুষমাকে কিসের প্রয়োজন।
বাঁশরি। অন্ন চাই-যে। মেয়েরা প্রহরণধারিণী না হোক বেড়িহাতা-ধারিণী তো বটে। রাজভাণ্ডারের চাবিটা থাকবে ওরই হাতে। ঐ-যে ওরা বেরিয়ে আসছে, অনুষ্ঠান শেষ হল বুঝি।
পুরন্দর। (সোমশংকর ও সুষমাকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে) তোমাদের মিলনের শেষ কথাটা ঘরের দেয়ালের মধ্যে নয় বাইরে, বড়ো রাস্তার সামনে। সুষমা, বৎসে, যে সম্বন্ধ মুক্তির দিকে নিয়ে চলে তাকেই শ্রদ্ধা করি। যা বেঁধে রাখে পশুর মতো প্রকৃতির-গড়া প্রবৃত্তির বন্ধনে বা মানুষের-গড়া দাসত্বের শৃঙ্খলে ধিক্ তাকে। পুরুষ কর্ম করে, স্ত্রী শক্তি দেয়। মুক্তির রথ কর্ম, মুক্তির বাহন শক্তি। সুষমা, ধনে তোমার লোভ নেই, তাই ধনে তোমার অধিকার। তুমি সন্ন্যাসীর শিষ্যা, তাই রাজার গৃহিণীপদে তোমার পূর্ণতা। (ডান হাতে সোমশংকরের ডান হাত ধরে)
ওঠো, তুমি যশোলাভ করো। শত্রুদের জয় করো–যে রাজ্য অসীম সমৃদ্ধিবান তাকে ভোগ করো। বৎস, আমার সঙ্গে আবৃত্তি করো প্রণামের মন্ত্র।
তোমাকে নমস্কার সম্মুখ থেকে, তোমাকে নমস্কার পশ্চাৎ থেকে, হে সর্ব, তোমাকে নমস্কার সর্ব দিক থেকে। অনন্তবীর্য তুমি, অমিতবিক্রম তুমি, তোমাতেই সর্ব, তুমিই সর্ব!
সুষমা। এইবার সেই গানটা গা দেখি ভাই।