প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
অমিতা। না, শুধু অমন করে পথ চেয়ে বসে দীর্ঘনিশ্বাস ফেললে চলবে না। শীতের অরণ্য যেমন তার সমস্ত উৎসুক শাখা আকাশে তুলে ডাক দেয় তেমনি করে ডাকতে হবে।
নুটু। রানী, অত বেশি ডাকাডাকি করে আনতে গেলে মান থাকে না।
অমিতা। কী যে বলিস বসন্তিকা, তার মানে নেই। নিজের মান নিয়ে করব কী! মান আমার ভেসে যাক্-না, মান যেন তারি থাকে।
নুটু। কিন্তু ডাকতে হয় কেন রানী বুঝতে পারি নে। যার দেবার সে অমনি দিয়ে যায় না কেন!
অমিতা। সে যত বড়ো দাতাই হোক-না কেন, সে তার সাধ্য নেই। ডাকতে পারি বলেই সে দিতে পারে। বন বৃষ্টিকে চায় বলেই মেঘ বৃষ্টি দিয়ে সার্থক হয়, মরুভূমিকে দিতে পারে এমন উপায় তার হাতে নেই। সে-কথা পরে হবে। এখন এসো তো তোমরা, শুধু গানের ডাক নয় নাচের ডাক ডাকো— কণ্ঠ দিয়ে অঙ্গ দিয়ে-দেহের সমস্ত রক্তে ডাকের ঢেউ উঠতে থাক্— ধরো—
অমিতা। এবার এসো তো নন্দিনী। তোমার দুটি চক্ষু আকাশের আলোতে দুটি অপরাজিতার মতো ফুটে উঠেছে। তোমার তো ভয় নেই, দ্বিধা নেই। তুমি সহজ বিশ্বাসেই মনে নিশ্চিত ঠিক করেছ সুন্দর তোমাকে বর দেবেনই। যাকে তিনি নিজে বেছে নেন তার আর ভাবনা কী। দখিন হাওয়ার ছোঁওয়া বুঝি লাগল তোমার উপবনে। সুন্দর তোমার বনের শাখায়-শাখায় নাচের ছন্দ নিজে এনে দিয়েছেন।
নুটু। রানী, ওর মনে ভয় নেই বলেই বুঝি ভুল আছে। নিজের সৌভাগ্য ও কি জানে? কোথায় বসে বুঝি খেলছে।
অমিতা। ওগো নন্দিনী, ওই যে গান উঠেছে।