তপতী
আর-এক দল

১। নাগপত্তন জ্বালিয়ে দিয়েছে রে, জ্বালিয়ে দিয়েছে।

২। বলিস কী।

৩। হাঁ, সেখানকার মানুষগুলো শেষ পর্যন্ত চেঁচিয়ে গলা

ভেঙেছে— জয় মহারাজ কুমারসেনের জয়।

২। এর পিছনে আছে খুড়োরাজা। নাগপত্তন ওকে কিছুতেই মানে নি কিনা, এবার তারই শোধ নিলে বিদেশীকে নিয়ে।

৩। তা হলে অনেক পত্তনেরই লীলা সাঙ্গ হবে।


দেবদত্তের প্রবেশ

দেবদত্ত। শোনো শোনো, তোমাদের মধ্যে কুন্তীপুরের মানুষ কেউ আছে?

১। কেন বলো তো।

দেবদত্ত। চন্দ্রসেনের সঙ্গে বিক্রম মহারাজের পরামর্শ হয়েছে, সেখানে সৈন্য পাঠাবেন উৎপাত করবার জন্যে।

২। আপনি কে হন মশায়। বিদেশী বলে বোধ হচ্ছে।

দেবদত্ত। হাঁ, বিদেশী।

৩। জালন্ধরের মানুষ?

দেবদত্ত। ঠিক ঠাউরেছ।

১। তোমার এতটা ধর্মবুদ্ধি হল কেমন করে।

দেবদত্ত। বিধাতার আশ্চর্য মহিমায় কদাচিৎ এমনতরো ঘটে। তোমাদের কাশ্মীরে চন্দ্রসেন যে-বংশে জন্মেছেন সে বংশেও ভদ্রমানুষ জন্মায় দেখেছি।

২। বেশ বলেছেন, ঠাকুর, বেশ বলেছেন। ব্রাহ্মণ তো?

দেবদত্ত। হাঁ, ব্রাহ্মণ।

সকলে। প্রণাম হই।

২। নিজের রাজার বিরুদ্ধে আপনি—

দেবদত্ত। রাজার বিরুদ্ধে বল একে কোন্‌ বুদ্ধিতে। আমার রাজার পাপ যতটা নিবারণ করব আমার রাজভক্তি ততটাই সার্থক হবে।

৩। কিন্তু বিপদ আছে তো ঠাকুর, রাজা যদি—

দেবদত্ত। রাজার হয়ে আজ যারা অন্যায় করছে, বিপদের আশঙ্কা আমার চেয়ে তাদের তো কম নয়। অধর্ম যদি সাহস দিতে পারে, ধর্ম কি ভীরু হবে।

২। খুব বড়ো কথা বললে ঠাকুর। দাও, আর-একবার পায়ের ধুলো দাও।

দেবদত্ত। যুবরাজ কুমারসেন এখান থেকে পালাতে পেরেছেন?

১। ঠাকুর মাপ করো, ঐটে পারব না, যুবরাজের কথা তোমার সঙ্গেও চলবে না।

দেবদত্ত। কিছু বলতে হবে না, আমি জানতে চাই, তিনি নিরাপদ তো?