ভগ্নহৃদয়
শূন্য— শূন্য— শূন্য সব      বাতায়ন অন্ধকার!
ফুলময় বাহু দিয়া     আঁধারকে বুকে নিয়া
আঁধারকে আলিঙ্গিয়া রয়েছে সে লতাগুলি,
তবু ফিরি ফিরি সেথা     আসিলাম ভুলি ভুলি!
তেমনি সকলি আছে—     বাতায়ন ফুলে সাজি,
দুলিছে তেমনি করি      বাতাসে কুসুমরাজি!
শুধু এ মনে আমার     এক কথা বার বার
এক সুরে মাঝে মাঝে      উঠিতেছে বাজি বাজি—
“প্রতিদিন দেখি তারে,     কেন না দেখিনু আজি?
কেন না দেখিনু তারে,     কেন না দেখিনু আজি?”
অতিধীর পদক্ষেপে     আলয়ে আসিনু ফিরি,
শতবার আনমনে     বলিলাম ধীরি ধীরি—
“প্রতিদিন দেখি তারে,     কেন না দেখিনু আজি?”
চতুর্থ গান
কাল যবে দেখা হ’ল পথে যেতে যেতে চলি
মোরে হেরে আঁখি তার কেন গো পড়িল ঢলি?
অজানা পথিকে হেরি এত কি সরম হবে?
কি যেন গো কথা আছে, আটকিয়া রহিয়াছে!
আধ—মুদা দুটি আঁখি কি যেন রেখেছে ঢাকি,
খুলিলে আঁখির পাতা প্রকাশ তা হয় পাছে!
সরম না হয় যদি, এ ভাব কিসের তবে?
কাল তাই বোসে বোসে ভাবিয়াছি সারাক্ষণ,
স্বপনে দেখেছি তার ঢ’লে-পড়া দু-নয়ন!
প্রভাতে বসিয়া আজ ভাবিতেছি নিরিবিলি—
“মোরে হেরে আঁখি তার কেন গো পড়িল ঢলি?”
পঞ্চম গান
সত্য কি তাহারে ভালোবাসি?
ভুলিনু কি শুধু তার দেখে রূপরাশি?
স্বপনে জানি না তার হৃদয় কেমন,
সহসা আপনা ভুলে—    শুধু কি রূপসী ব’লে
জীবন্তপুত্তলী-পদে বিসর্জিনু মন?