মালিনী
ভরসা বাঁধহ বক্ষোমাঝে। শুন তবে—
জীবনপ্রতিমে, বৎসে, যে তোমার প্রাণ
রক্ষা করিয়াছে, সেহ বিপ্র গুণবান্
সুপ্রিয় সবার প্রিয়, প্রিয়দরশন,
তারে—
সুপ্রিয়। ক্ষান্ত হও, ক্ষান্ত হও হে রাজন্!
অয়ি দেবী,আজন্মের ভক্তি-উপহারে
পেয়েছে আপন ঘরে ইষ্টদেবতারে
কত অকিঞ্চন— তেমনি পেতেম যদি
আমার দেবীরে, রহিতাম নিরবধি
ধন্য হয়ে। রাজহস্ত হতে পুরস্কার!
কী করেছি? আশৈশব বন্ধুত্ব আমার
করেছি বিক্রয়, আজি তারি বিনিময়ে
লয়ে যাব শিরে করি আপন আলয়ে
পরিপূর্ণ সার্থকতা? তপস্যা করিয়া
মাগিব পরমসিদ্ধি জন্মান্ত ধরিয়া—
জন্মান্তরে পাই যদি তবে তাই হোক—
বন্ধুর বিশ্বাস ভাঙি সপ্ত স্বর্গলোক
চাহি না লভিতে। পূর্ণকাম তুমি দেবী,
আপনার অন্তরের মহত্ত্বেরে সেবি
পেয়েছ অনন্ত শান্তি— আমি দীনহীন
পথে পথে ফিরে মরি অদৃষ্ট-অধীন
শ্রান্ত নিজভারে। আর কিছু চাহিব না—
দিতেছ নিখিলময় যে শুভকামনা
মনে করে অভাগারে তারি এক কণা
দিয়ো মনে মনে।
মালিনী। ওরে রমণীর মন,
কোথা বক্ষোমাঝে বসে করিস ক্রন্দন
মধ্যাহ্নে নির্জন নীড়ে প্রিয়বিরহিতা
কপোতীর প্রায়?— কী করেছ বলো পিতা
বন্দীর বিচার?
রাজা। প্রাণদণ্ড হবে তার।