ভগ্নহৃদয়
তবু সে করিবে কেন মোরে অবিশ্বাস?
[প্রস্থান
ললিতা। আর কেন অনুক্ষণ রহি তার পাশে
নিতান্তই যদি মোরে ভালো নাহি বাসে?
বিরক্তিতে ওষ্ঠ তার কাঁপিতেছে বার বার,
তবুও ললিতা তার পায়ে পড়ে আছে!
সঙ্গ তার তেয়াগিয়া আছেন বিরলে গিয়া,
সেথাও ললিতা ছুটে গেছে তাঁর কাছে!
এই মুখে হাসি ছিল তারে দেখি মিলাইল,
তবু সে রয়েছে বসি পদতলে তাঁর!
যেখানেই তিনি যান সেথাই দেখিতে পান
এই এক পুরাতন মুখ ললিতার!
প্রমোদ-আগারে বসি— সেথা এই মুখ!
বিরলে ভাবনা-মগ্ন— সেথা এই মুখ!
বিজনে বিষাদভরে নয়নে সলিল ঝরে,
সেথাও সমুখে আছে এই— এই মুখ!
কি আছে এ মুখে তোর ললিতা অভাগী?
ওই মুখ— ওই মুখ— দিবানিশি ওই মুখ
যেথা যান সেথা লয়ে যাস্ রে কি লাগি?
ছিনু ওই পদতলে প’ড়ে দিন রাত—
করেছিনু পথরোধ, দিয়েছে তাহার শোধ—
ভালোই করেছ সখা, করেছ আঘাত!
মনে করেছিনু, সখা, প্রণয় আমার
ফুলময় পথ হবে, তোমারে বুকেতে লবে—
চরণে কঠিন মাটি বাজিবে না আর!
কিন্তু যদি ও পদের কাঁটা হয়ে থাকি
এখনিই তুলে ফেল, এখনিই দ’লে ফেল—
এমন পথের বাধা কি হবে গো রাখি?
আজ হতে দিবানিশি রব নাকো কাছে?
নিতান্তই ফাটে বুক, অশ্রুবারি আছে—
বিজনে কাঁদিতে পারি— একেলা ভাবিতে পারি—
আর কি করি গো আশা? হবে যা হবার,