ভগ্নহৃদয়
তাহা হলে নলিনী এ কেঁদে মরিবে কি!
এই যে উড়াই ধূলা চরণের ঘায়
বায়ুভরে এও তো পশ্চাতে চলে যায়,
তাই নলিনীর আঁখি     অশ্রু বরষিবে না কি!
হা কপাল, এও সে কি ছিল মনে ক’রে
কথা না কহিয়া সেও ব্যথা দিবে মোরে!
এ যে হাসিবার কথা—     সেও মোরে দিবে ব্যথা,
কাল যারে নিতান্ত করেছি অবহেলা,
কৃপা করে দেখিতাম যার প্রেমখেলা,
সেও আজ ভাবিয়াছে ব্যথিবে এ মন
শুধু কথা না কহিয়া, ফিরায়ে নয়ন!


সপ্তবিংশ সর্গ
কবি
মুরলা রে— মুরলা, কোথায়?
দেশে দেশে ভ্রমিতেছি কোথায়— কোথায়?
সম্মুখে বিশাল মাঠ ধুধু করিতেছে,
সে মাঠেতে অন্ধকার— বিস্তারিয়া বাহু তার
ভূমিতে রাখিয়া মুখ কেঁদে মরিতেছে!
কোথা তুই— কোথা মুরলা রে,
কোথা তুই গেলি বল্—শুধাইব কারে?
উদিল সন্ধ্যার তারা ওই রে গগনে?
ওই তারা কত দিন দেখেছি দুজনে!
তা কি তোর মুরলা রে মনে আর পড়ে না রে?
সে-সকল কথা তুই ভুলিলি কেমনে?
কত দিন— কত কথা— কত সে ঘটনা—
মনের ভিতরে কি রে আকুলি ওঠে না?
তবে তুই কি পাষাণে বেঁধেছিলি হিয়া?
কেমনে কবিরে তোর গেলি তেয়াগিয়া?
বিজন আকাশে মোর ছিলি রে সতত
স্থিরজ্যোতি ওই সন্ধ্যাতারাটির মতো,