চিত্রাঙ্গদা
নিত্য কীর্তিতৃষা, শান্ত হয়ে লুটাইয়া
পড়ে ভূমে, ওই পূর্ণ সৌন্দর্যের কাছে;
পশুরাজ সিংহ যথা সিংহবাহিনীর
ভূবনবাঞ্ছিত অরুণচরণতলে।
আর এক বার যদি—কে দুয়ার ঠেলে!
দ্বার খুলিয়া
এ কী! সেই মুর্তি! শান্ত হও হে হৃদয়।
কোনো ভয় নাই মোরে বরাননে। আমি
ক্ষত্রকুলজাত; ভয়ভীত দুর্বলের
ভয়হারী।
চিত্রাঙ্গদা। আর্য, তুমি অতিথি আমার।
এ মন্দির আমার আশ্রম। নাহি জানি
কেমনে করিব অভ্যর্থনা, কী সৎকারে
তোমারে তুষিব আমি।
অর্জুন। অতিথি-সৎকার
তব দরশনে, হে সুন্দরী! শিষ্টবাক্য
সমূহ সৌভাগ্য মোর। যদি নাহি লহ
অপরাধ, প্রশ্ন এক শুধাইতে চাহি,
চিত্ত মোর কুতূহলী।
চিত্রাঙ্গদা। শুধাও নির্ভয়ে।
অর্জুন। শুচিস্মিতে, কোন্ সুকঠোর ব্রত লাগি
জনহীন দেবালয়ে হেন রূপরাশি
হেলায় দিতেছ বিসর্জন, হতভাগ্য
মর্ত্যজনে করিয়া বঞ্চিত।
চিত্রাঙ্গদা। গুপ্ত এক
কামনা-সাধনা-তরে একমনে করি
শিবপূজা।
অর্জুন। হায়, কারে করিছে কামনা
জগতের কামনার ধন। সুদর্শনে,
উদয়শিখর হতে অস্তাচলভূমি