প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
নীরজা। (ব্যাকুলভাবে) কিছু একটা বলো ঠাকুরপো।
অন্যায় করেছি, আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু কেউ কি তোমরা বুঝতে পার না কিসে আমার মাথা দিল খারাপ করে?
রমেন। কী করছ বউদি, শান্ত হও, তোমার শরীর যে যাবে ভেঙে।
নীরজা। এই ভাঙা শরীরই তো আমার কপাল ভেঙেছে। ওর জন্যে মমতা কিসের? তাঁর ’পরে আমার অবিশ্বাস এ দেখা দিল কোথা থেকে? এ যে অক্ষম জীবন নিয়ে আমার নিজেরই উপরে অবিশ্বাস। সেই তাঁর নীরু আজ আছে কোথায়, যাকে তিনি কখনো বলতেন ‘বনলক্ষ্মী’। আজ কে নিলে কেড়ে তার উপবন? আমার কি একটা নাম ছিল? কাজ সেরে আসতে যেদিন তাঁর দেরি হত আমি বসে থাকতুম তাঁর খাবার আগলে, তখন আমাকে ডেকেছেন ‘অন্নপূর্ণা’। সন্ধ্যাবেলায় তিনি বসতেন দিঘির ঘাটে, ছোটো রুপোর থালায় বেলফুল রাশ করে তার উপরে পান সাজিয়ে দিতাম তাঁকে, হেসে আমাকে বলতেন, ‘তাম্বুলকরঙ্কবাহিনী’। সেদিন সংসারের সব পরামর্শই আমার কাছ থেকে নিয়েছেন তিনি। আমাকে নাম দিয়েছিলেন, ‘গৃহসচিব’ কখনো-বা ‘হোম সেক্রেটারি’। আমি যেন সমুদ্রে এসেছিলেম ভরা নদী, ছড়িয়েছিলেম নানা শাখা নানা দিকে। সব শাখাতেই আজ একদণ্ডে জল গেল শুকিয়ে, বেরিয়ে পড়ল পাথর।
রমেন। বউদি, আবার তুমি সেরে উঠবে—তোমার আসন আবার অধিকার করবে পূর্ণ শক্তি দিয়ে।
নীরজা। মিছে আশা দিয়ো না ঠাকুরপো। ডাক্তার কী বলে সে আমার কানে আসে। সেইজন্যেই এতদিনের সুখের সংসারকে এত করে আঁকড়ে ধরছে আমার এই কাঙাল নৈরাশ্য। রমেন। দরকার কী বউদি? আপনাকে এতদিন তো ঢেলে দিয়েছ তোমার সংসারে। তার চেয়ে বড়ো কথা আর কিছু আছে কি? যেমন দিয়েছ তেমনি পেয়েছ, এত পাওয়াই বা কোন্ মেয়ে পায়? যদি