মুক্তধারা
গান

নমো যন্ত্র,     নমো যন্ত্র, নমো যন্ত্র, নমো যন্ত্র।

তুমি     চক্রমুখরমন্দ্রিত,

তুমি     বজ্রবহ্নিবন্দিত,

তব      বস্তুবিশ্ববক্ষোদংশ

ধ্বংসবিকট দন্ত।

তব      দীপ্ত অগ্নি শত শতঘ্নী

বিঘ্নবিজয় পন্থ।

তব      লৌহগলন শৈলদলন

অচলচলন মন্ত্র।

কভু     কাষ্ঠলোষ্ট্রইষ্টকদৃঢ়

ঘনপিনদ্ধ কায়া,

কভু     ভুতলজল-অন্তরীক্ষ-

লঙ্ঘন লঘুমায়া,

তব      খনিখনিত্রনখবিদীর্ণ

ক্ষিতি বিকীর্ণ-অন্ত্র,

তব       পঞ্চভূতবন্ধনকর

ইন্দ্রজালতন্ত্র।


উত্তরকূটের রাজা রণজিৎ ও তাঁহার মন্ত্রী শিবিরের দিক হইতে আসিয়া প্রবেশ করিলেন

রণজিৎ। শিবতরাইয়ের প্রজাদের কিছুতেই তো বাধ্য করতে পারলে না। এতদিন পরে মুক্তধারার জলকে আয়ত্ত করে বিভূতি ওদের বশ মানাবার উপায় করে দিলে। কিন্তু, মন্ত্রী, তোমার তো তেমন উৎসাহ দেখছি নে। ঈর্ষা?

মন্ত্রী। ক্ষমা করবেন, মহারাজ। খন্তা-কোদাল হাতে মাটি-পাথরের সঙ্গে পালোয়ানি আমাদের কাজ নয়। রাষ্ট্রনীতি আমাদের অস্ত্র, মানুষের মন নিয়ে আমাদের কারবার। যুবরাজকে শিবতরাইয়ের শাসনভার দেবার মন্ত্রণা আমিই দিয়েছিলুম, তাতে যে বাঁধ বাঁধা হতে পারত সে কম নয়।

রণজিৎ। তাতে ফল হল কী? দুবছর খাজনা বাকি। এমনতরো দুর্ভিক্ষ তো সেখানে বারে বারেই ঘটে, তাই বলে রাজার প্রাপ্য তো বন্ধ হয় না।

মন্ত্রী। খাজনার চেয়ে দুর্মূল্য জিনিস আদায় হচ্ছিল, এমন সময় তাঁকে ফিরে আসতে আদেশ করলেন। রাজকার্যে ছোটোদের অবজ্ঞা করতে নেই। মনে রাখবেন, যখন অসহ্য হয় তখন দুঃখের জোরে ছোটোরা বড়োদের ছাড়িয়ে বড়ো হয়ে ওঠে।

রণজিৎ। তোমার মন্ত্রণার সুর ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। কতবার বলেছ উপরে চড়ে বসে নীচে চাপ দেওয়া সহজ, আর বিদেশী প্রজাদের সেই চাপে রাখাই রাজনীতি। এ কথা বল নি?

মন্ত্রী। বলেছিলুম। তখন অবস্থা অন্যরকম ছিল, আমার মন্ত্রণা সময়য়োচিত হয়েছিল। কিন্তু এখন—