কালের যাত্রা

মহাকালের পাণ্ডা বসে মাথায় হাত দিয়ে।

সন্ন্যাসীর প্রবেশ

সন্ন্যাসী

সর্বনাশ এল।

বাধবে যুদ্ধ, জ্বলবে আগুন, লাগবে মারী,

ধরণী হবে বন্ধ্যা, জল যাবে শুকিয়ে।

প্রথমা

এ কী অকল্যাণের কথা ঠাকুর!

উৎসবে এসেছি মহাকালের মন্দিরে —

আজ রথযাত্রার দিন।

সন্ন্যাসী

দেখতে পাচ্ছ না — আজ ধনীর আছে ধন,

তার মূল্য গেছে ফাঁক হয়ে গজভুক্ত কপিত্থের মতো।

ভরা ফসলের খেতে বাসা করেছে উপবাস।

যক্ষরাজ স্বয়ং তার ভাণ্ডারে বসেছে প্রায়োপবেশনে।

দেখতে পাচ্ছ না — লক্ষ্মীর ভাণ্ড আজ শতছিদ্র,

তাঁর প্রসাদধারা শুষে নিচ্ছে মরুভূমিতে —

ফলছে না কোনো ফল।


তৃতীয়া

হাঁ ঠাকুর, তাই তো দেখি।

সন্ন্যাসী

তোমরা কেবলই করেছ ঋণ,

কিছুই কর নি শোধ,

দেউলে করে দিয়েছ যুগের বিত্ত।

তাই নড়ে না আজ আর রথ —

ওই যে, পথের বুক জুড়ে পড়ে আছে তার অসাড় দড়িটা।

প্রথমা

তাই তো, বাপ রে, গা শিউরে ওঠে —

এ যে অজগর সাপ, খেয়ে খেয়ে মোটা হয়ে আর নড়ে না।

সন্ন্যাসী

ওই তো রথের দড়ি, যত চলে না ততই জড়ায়।

যখন চলে, দেয় মুক্তি।