কালের যাত্রা

তৃতীয় নাগরিক

তা হলে ওর নাড়া খেয়ে সংসারের সব জোড়গুলো

বিজোড় হয়ে পড়বে। আমরা যদি না চালাই —

ও যদি আপনি চলে, তা হলে পড়ব যে চাকার তলায়।

প্রথম নাগরিক

ওই দেখ্‌ ভাই, পুরুতের গেছে মুখ শুকিয়ে,

কোণে বসে বসে পড়ছে মন্তর।

দ্বিতীয় নাগরিক

সেদিন নেই রে

যেদিন পুরুতের মন্তর-পড়া হাতের টানে চলত রথ।

ওরা ছিল কালের প্রথম বাহন।

তৃতীয় নাগরিক

তবু আজ ভোরবেলা দেখি ঠাকুর লেগেছেন টান দিতে —

কিন্তু একেবারেই উলটো দিকে, পিছনের পথে।

 

প্রথম নাগরিক

সেটাই তো ঠিক পথ, পবিত্র পথ, আদি পথ।

সেই পথ থেকে দূরে এসেই তো কালের মাথার ঠিক থাকছে না।

 

দ্বিতীয় নাগরিক

মস্ত পণ্ডিত হয়ে উঠলি দেখি। এত কথা শিখলি কোথা।

প্রথম নাগরিক

ওই পণ্ডিতেরই কাছে। তাঁরা বলেন —

মহাকালের নিজের নাড়ীর টান পিছনের দিকে,

পাঁচজনের দড়ির টানে অগত্যা চলেন সামনে।

নইলে তিনি পিছু হটতে হটতে একেবারে পৌছতেন

অনাদি কালের অতল গহ্বরে।

 

তৃতীয় নাগরিক

ওই রশিটার দিকে চাইতে ভয় করে।

ওটা যেন যুগান্তের নাড়ী —

সান্নিপাতিক জ্বরে আজ দব্‌দব্‌ করছে।