কালের যাত্রা

অশান্তিও তো কম দেখছি নে ওদের মধ্যে।

 

যখন শিবের ভোগ ভেঙে নিজের দিকে চুরি করে

উৎপাত বাধে তখন অশিবের।

ত্যাগের ধনে মানুষ ধনী, চুরির ধনে নয়।

আমরা কুঁড়ে, ভিক্ষুক দেবতাকে দিই নে কিছু।

তাই মরছি সব দিকেই —

খেতে ফসল যায় মরে,

পুকুরে জল যায় শুকিয়ে,

দেহে ধরে রোগ, মনে ধরে অবসাদ,

বিদেশী রাজা দেয় দুই কান মলে।

শিবের ঝুলি ভরব যেদিন, সেদিন আমাদের সব ভরবে।

 

কিন্তু গোড়ায় বলছিলে যে রসের কথাটা

শিবের ঝুলিতে তো তার খবর মেলে না।

 

মেলে বৈকি। গাছের ত্যাগ ফল দিয়ে।

ফল ফলে না রস না হলে।

প্রাণের ধনই হল আনন্দ, যাকে বলি রস।

যেখানে রসের দৈন্য, ভরে না সেখানে প্রাণের কমণ্ডলু।

 

শ্মশানে কেন দেখি তোমার ওই দেবতাকে।

মৃত্যুতে তাঁর বিলাস বলে নয়, মৃত্যুকে জয় করবেন বলে।

যে দেবতারা অমরাবতীতে

দ্বন্দ্বই নেই তাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে।

মানুষের যিনি শিব

তিনি বিষপান করেন বিষকে কাটাবেন বলে।

‘ ভিক্ষা দাও ' ‘ ভিক্ষা দাও ' দ্বারে দ্বারে রব উঠল তাঁর কণ্ঠে —

সে মুষ্টিভিক্ষা নয়, নয় অবজ্ঞার ভিক্ষা।

নির্ঝরিণীর স্রোত যখন হয় অলস

তখন তার দানে পঙ্ক হয় প্রধান।

দুর্বল আত্মার তামসিক দানে

দেবতার তৃতীয় নেত্রে আগুন ওঠে জ্বলে।