রোগের চিকিৎসা

হারাধন। না বাবা, এমন আমার মাঝে মাঝে হয়, আপনি সেরে যায়।

ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌

পিতা। কই রে, এ তো ক্রমেই বাড়ছে। চল্‌, আর দেরি নয়।

[ টানিয়া লইয়া প্রস্থান


তৃতীয় দৃশ্য
হারাধন। পিতা ও মাতা

মা। ( কাঁদিতে কাঁদিতে) বাছার আমার কী হল গা!

পিতা। হাঁগো, তুমি বেশি গোল কোরো না। হাঁসপাতালে নিয়ে গেলেই এ ব্যামো সেরে যাবে।

মা। আমি বেশি গোল করছি, না তোমার ছেলের পেট বেশি গোল করছে! (সভয়ে) এ যে হাঁসের মতো ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ করে। বাবা হারু, তোকে আর আমি হাঁসের ডিম খেতে দেব না — তোর পেটের মধ্যে হাঁস ডাকছে — কী হবে!

[ ক্রন্দন

হারাধন। ( তাড়াতাড়ি) না মা, ও হাঁস নয়, ও তালের বড়া। হাঁস তোমাকে কে বললে? কক্‌খনো হাঁস নয়। হাঁস হতেই পারে না। আচ্ছা, বাজি রাখো, যদি তালের বড়া হয়!

মা। তালের বড়া কি অমন করে ডাকে বাছা!

হারাধন। তুমি একটু চুপ করো মা! তোমাদের গোলমাল শুনে পেটের ভিতর আরো বেশি করে ডাকছে।

পিতা। বোসেদের বাড়ি আমার একটু কাজ আছে, আমি কাজ সেরেই হারুকে নিয়ে হাঁসপাতালে যাচ্ছি।

[ প্রস্থান

ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌ ক্যাঁক্‌

মা। ওগো, এ যে ক্রমেই বাড়তে চলল! ওগো মুখুজ্যেমশাই!

মুখুজ্যেমশাইয়ের প্রবেশ

মুখুজ্যে। কী গো বাছা?

মা। বাছার আমার ক্রমেই বাড়তে লাগল। একে শিগগির — ঐ-যে কী বলে ঐ — তোমাদের হাঁচপাতালে নিয়ে চলো।

মুখুজ্যে। আমি তো তাই প্রথম থেকেই বলছি, হারুর বাবাই তো এতক্ষণ দেরি করিয়ে রাখলে। ( হারার প্রতি) তবে চল্‌, ওঠ্‌।

হারাধন। না দাদামশায়, আমি হাঁসপাতালে যাব না, আমার কিছু হয় নি।

মুখুজ্যে। কিছু হয় নি বটে! তোর পেটের ডাকের চোটে পাড়াসুদ্ধ অস্থির হয়ে উঠল। পেটের মধ্যে বাত শ্লেষ্মা পিত্ত তিনটিতে মিলে যেন দাঙ্গাহাঙ্গামা বাধিয়ে দিয়েছে।

[ বলপূর্বক লইয়া যাওন